আজ, সোমবারই বাংলায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে— এমন সম্ভাবনায় ইতিমধ্যেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ভোটার তালিকার সংশোধন প্রক্রিয়া ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন টানাপোড়েন, বিশেষত মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে চাপে রয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
রবিবার মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর আশ্বাসের সুরে বলেন, “এসআইআর নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছেন অনেকেই। আগে নাগরিকত্বের আবেদন করুন। যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করুন। এসআইআরে যদি নাম বাদ যায়, নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আবার ভোটার তালিকায় নাম উঠবে। ভয় পাবেন না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যাঁরা ওপার থেকে আসা উদ্বাস্তু, রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি মুসলমান নয়, ভূতুড়ে ভোটার নয়— তাঁরা চটজলদি CAA আবেদন করুন। নাগরিকত্ব পেলেই ভোটার কার্ড করে দেওয়া হবে। যদি সমস্যা হয়, আমার কাছে আসবেন— আমি করে দেব ভোটার কার্ড।”
শান্তনুর এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “এসআইআরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে চলেছে মতুয়াদের, সেটা বুঝে গিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। তাই এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। বলছেন, বাদ গেলে CAA দিয়ে ঢোকাবেন! এটা আসলে মতুয়াদের বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা।”
কুণালের দাবি, “এসআইআরের প্রক্রিয়ায় যে ভাবে বাদ দেওয়া হচ্ছে, তাতে বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ, বিশেষত মতুয়ারা বিপাকে পড়বেন। বিজেপি শুধু ‘মুসলিম’ ইস্যু তুলছে, কিন্তু বাস্তবে আঘাত লাগবে হিন্দু উদ্বাস্তুদের উপরেই।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বনগাঁ, হাবড়া, নদিয়া, রানাঘাটের মতো এলাকায় বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের পিছনে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক একটি বড় ফ্যাক্টর। সেই ভোটব্যাঙ্কে টান পড়লে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফলে বড় প্রভাব পড়তে পারে।
সেই কারণেই এসআইআর ঘোষণার ঠিক আগেই শান্তনু ঠাকুরের এমন আশ্বাস— রাজনৈতিক দিক থেকে তা বিজেপির ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
জাতীয় নির্বাচন কমিশন সোমবার বিকেল চারটেয় দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে। সেখানেই বাংলাসহ একাধিক রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর প্রথম ধাপ ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।এই ঘোষণার আগে থেকেই রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর, যার কেন্দ্রবিন্দুতে আবারও CAA ও মতুয়া ভোটবাক্স।