পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়ে গেল ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)। রাজ্যজুড়ে বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম পৌঁছে দেবেন ও তথ্য সংগ্রহ করবেন।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) দফতর জানিয়েছে, ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের পাশাপাশি ফর্মে নাম, ঠিকানা ও পারিবারিক বিবরণ মিলিয়ে দেখা হবে। যাঁরা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকেন, তাঁদের জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণেরও ব্যবস্থা থাকছে। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে মঙ্গলবার থেকেই সেই অনলাইন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে না। সিইও দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “সমস্যা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা চলছে। দু’-এক দিনের মধ্যে অনলাইন পরিষেবা শুরু হতে পারে।”
কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এসআইআর ‘ম্যাপিং’-এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে — অর্থাৎ ২০০২ সালে শেষবার যে এসআইআর হয়েছিল, সেই ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত ২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৭১ হাজার ১১৪ জন ভোটারের তথ্য মিলেছে, যা মোট ভোটারের ৩২.০৬ শতাংশ। এই প্রক্রিয়ায় ভোটারের নাম বা তাঁর বাবা-মায়ের নাম দুই তালিকায় অভিন্ন কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
যাঁদের তথ্য ২০০২ সালের এসআইআর তালিকার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, তাঁদের শুধু ফর্ম পূরণ করলেই চলবে — কোনও বাড়তি নথি দিতে হবে না। তবে যাঁদের তথ্য মেলেনি, তাঁদের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র বা ঠিকানার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
রাজ্যে মোট ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯ জন ভোটারের কাছে এনুমারেশন ফর্ম পৌঁছনোর কথা। কমিশনের দাবি, এই বিশাল সংখ্যক ভোটারের জন্য দ্বিগুণ সংখ্যক ফর্ম ছাপানো হয়েছে।
এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ-২) নিয়োগেও তৈরি হয়েছে জল্পনা। রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৯৪ হাজারের বেশি, অথচ এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত বিএলএ সংখ্যা মাত্র ৪১,৮০০। সিইও দফতর জানিয়েছে, কোন দল কতজন এজেন্ট নিয়োগ করেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তৃণমূল ও বিজেপি দুই প্রধান দল সব বুথে প্রতিনিধি দিলে এই সংখ্যা ১ লক্ষ ৮০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা।
রাজ্যজুড়ে চলবে এই বৃহৎ ভোটার যাচাই অভিযান। নির্বাচন কমিশনের দাবি, এবার এসআইআর প্রক্রিয়ায় তথ্যগত স্বচ্ছতা ও ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরিই মূল লক্ষ্য।