ডেস্ক: প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন প্রয়াত সাংসদ সোমেন মিত্রর ছেলে রোহন মিত্র। আজই প্রদেশ নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তার আগেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন রোহন। চিঠিতে সোমেন-পুত্র দাবি করেছেন, ‘অধীর চৌধুরী যোগ্য নেতা। কিন্তু যাঁদের নিয়ে চলছেন, তাঁদের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। সেই কারণেই কংগ্রেসের এই হাল। সেকারণেই ক্রমশ অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস।
এতকিছুর পরেও রাজ্যে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে যে অধীর চৌধুরী যোগ্যতম ব্যক্তি, তাও চিঠিতে উল্লেখ করেন রোহন মিত্র। তবে অধীরের সংগঠন পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। দলের সংগঠনে সংশোধন আনার প্রস্তাবও রাখেন তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেসে সভাপতি থাকাকালীন প্রয়াত হন সোমেন মিত্র। ছেলে রোহনের সঙ্গে কিন্তু দলের রাজ্য নেতৃত্বের সম্পর্ক মসূণ ছিল না একেবারেই। দিন কয়েক আগেই অভিযোগ করেছিলেন, বিধানসভা ভোটে ভরাডুরি পরেও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বৃত্তের থেকে বেরোতে পারছে না। টুইট নাম না করে নিশানা করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। লিখেছিলেন, ‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। যদিও সেপ্টেম্বর মাস থেকে তিনি আমার সঙ্গে কোনওরকম কথাবার্তা বলেননি। তা সত্ত্বেও আমি তাঁর সভাপতির আসনকে আমি সম্মান করি। কিন্তু প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা যা করছেন, তা ন্যক্কারজনক’।
পাশাপাশি এদিনের চিঠিতে রোহন এও উল্লেখ করেন যে অধীরের সভাপতিত্বে মিত্র পরিবার কীভাবে উপেক্ষিত এবং অপমানিত হয়েছে বারংবার। সোমেন মিত্র সভাপতি থাকালীন রোহন যখন যুব কংগ্রেসের নির্বাচনে লড়েছিলেন, সেই সময় তাঁকে জোর করে হারানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দিল্লি থেকে ফিরে ফের ‘লম্বা ছুটি’ কাটাতে দিল্লি উড়ে গেলেন দিলীপ ঘোষ
পাশাপাশি আইএসএফের সঙ্গে জোটের ক্ষেত্রে অধীর চৌধুরী ও প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের যে ভূমিকা রয়েছে, তারও কটাক্ষ করেছেন রোহন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একাধিকবার দরবার করা সত্ত্বেও , প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব কেন তাঁর সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেন নি, সেই প্রশ্ন চিঠিতে তুলেছেন রোহন মিত্র। বাবা সোমেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকা সত্ত্বেও যুব কংগ্রেসের নির্বাচনে তাঁকে কী ভাবে হারানো হয়েছিল, তা নিয়েও সরব হন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে কোনও পদে থেকে এই দলের হয়ে কাজ করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন রোহন। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে তিনি আগ্রহ খুঁজে পাচ্ছেন না বলেও উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদ হারাতে পারেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। জাতীয় স্তরে এই জল্পনা তুঙ্গে। নাম উঠে আসছে শশী থরুর, গৌরব গগৈদের। এই আবহে রোহন মিত্রের পদত্যাগ কি অধীর চৌধুরীকে আরও চাপে ফেলতে রাজনৈতিক কৌশল? অন্যদিকে রোহন মিত্র কি তৃণমূলে যোগদান করতে চলেছেন, সে জল্পনাও ভাসছে রাজনৈতিক মহলে। আসন্ন ২১ জুলাই কি তৃণমূলের নেতৃত্ব পাশে দেখা যেতে পারে সোমেন পুত্রকে, সে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।