কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা ও ধসের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— দ্রুত দুধিয়ায় বালাসন নদীর উপর অস্থায়ী সেতু তৈরি হবে। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সোমবার থেকেই সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
সম্প্রতি নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টি ও হড়পা বানে বিপর্যস্ত হয়েছিল দার্জিলিং জেলার মিরিক এলাকা। ধসে ভেঙে পড়ে বালাসন নদীর উপর দুধিয়া সেতু, যা ছিল শিলিগুড়ি-মিরিক সংযোগের অন্যতম প্রধান পথ। ফলে দুই এলাকার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ঘোষণা করেন— “দুধিয়ায় দ্রুত অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত ১০ অক্টোবর থেকেই দ্রুতগতিতে কাজ শুরু হয়। প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পাইপ, বোল্ডার ও অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হয় অস্থায়ী এই সেতু। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই নির্মাণ সম্পন্ন।
সেতু ভেঙে পড়ার পর ঘুরপথে শিলিগুড়ি-মিরিক যোগাযোগ চালু হলেও তা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছিল। নতুন এই সেতু চালু হলে ফের স্বস্তি ফিরবে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মধ্যে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এই সেতু না থাকায় মিরিক যাওয়া-আসা খুব কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। এখন আবার সহজে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ওই এলাকায় একটি বেইলি ব্রিজ তৈরির কাজও চলছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই নতুন কংক্রিটের স্থায়ী সেতু নির্মাণের কাজও শুরু করেছে।
পুরনো সেতুর পাশেই নির্মিত হচ্ছে নতুন সেতুটি, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ₹৫১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জুলাই মাসে।
মিরিকের স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, দুধিয়া সেতু নতুন করে নির্মাণ করা হোক। সেই দাবি পূরণে মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি রেখেছেন, তাতে উচ্ছ্বসিত সাধারণ মানুষ ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা। “এই সেতু শুধু রাস্তা নয়, উত্তরবঙ্গের পর্যটন ও জীবিকারও সেতুবন্ধন,”— মন্তব্য স্থানীয় এক পুজো উদ্যোক্তার।
