কলকাতা: বউবাজারে মেট্রো রেলের নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে ফের বিপত্তি ঘটল। শুক্রবার সকালে সুড়ঙ্গে জল ঢোকার কারণে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে দ্রুত আধিকারিকেরা পৌঁছালেও তাদের স্থানীয়দের তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। এই ঘটনা শুধু বউবাজারেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনেও প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
বউবাজার দুর্গাপিতুরি লেনে মেট্রোর ক্রসপ্যাসেজ নির্মাণের সময় আবারও ‘ওয়াটার লিকেজ’ দেখা গিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের কিছু অংশে জল ঢুকে পড়ায় আশপাশের এলাকায় বাড়িঘরের স্থায়িত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আগেই তাদের এলাকা এবং বাড়িগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তাদের আশঙ্কা, জল ঢোকার কারণে বাড়িগুলির ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং নতুন করে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
এর আগে ২০১৯ সালে, একই এলাকায় মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজের কারণে একাধিক বাড়ি ধসে পড়েছিল এবং বহু মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে স্থানীয়রা বারবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। শুক্রবারের ঘটনার পর এই ক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সকালে যখন কেএমআরসিএল-এর আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান, তখন স্থানীয়রা তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, মেট্রো কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও তারা যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের দাবি, এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের সঠিক ব্যবস্থা করা হোক।
সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ সেখানে গিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং নিরাপত্তার দাবি জানান। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা সমস্যার দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছে এবং নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের জল ঢোকার কারণ খতিয়ে দেখছে।
কেএমআরসিএল-এর একজন মুখপাত্র বলেন, “আমরা সমস্যার সমাধান করতে বদ্ধপরিকর। ঘটনাস্থলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠানো হয়েছে, এবং সুড়ঙ্গের জল বের করার কাজ চলছে।” তবে, বাসিন্দাদের দাবি, তারা এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন, কারণ বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
এই ঘটনার পর মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন দ্রুত এবং স্থায়ী সমাধান।