রাজ্যে পালাবদলের পর শিল্পের পরিবেশে এসেছে আমূল পরিবর্তন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত চোদ্দো বছর ধরে দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলির ধারাবাহিক লগ্নিতে তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। সেই শিল্পসাফল্যেরই বাস্তব কাহিনি এবার তুলে ধরতে চলেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনায় আগামী ১৮ ডিসেম্বর ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হবে ‘বিজনেস ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’, যেখানে রাজ্যে বিনিয়োগকারী শিল্পপতিরা নিজেদের সাফল্যের গল্প শোনাবেন।
শুক্রবার নবান্নে অনুষ্ঠিত শিল্প সংক্রান্ত সিনার্জি বৈঠকের পর এই কনক্লেভের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রীর ও অর্থ দপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অ্যাডভাইজার ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি জানান, “যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, যাঁরা কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন, তাঁরাই তুলে ধরবেন রাজ্যে শিল্পের প্রকৃত অগ্রগতির ছবি।”
অমিত মিত্র বলেন, “এই কনক্লেভে আমরা শুনব সাফল্যের গল্প— কত বিনিয়োগ এসেছে, কত কর্মসংস্থান হয়েছে, এবং কীভাবে সেই সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। একইসঙ্গে শিল্পমহলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও এই মঞ্চে উঠে আসবে।”
কোন কোন ক্ষেত্রকে ফোকাস করা হচ্ছে?
নবান্ন সূত্রে খবর, ইস্পাত, জেমস ও জুয়েলারি, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ফিনটেক, সেমিকন্ডাক্টর, খাদ্য শিল্প, পর্যটন, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত সামগ্রী, ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত শিল্পক্ষেত্রকে এই কনক্লেভে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
অমিত মিত্র আরও বলেন, “কনক্লেভ ও সামিট এক নয়। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ডেলিগেটরা থাকেন। কিন্তু এই কনক্লেভ হবে একেবারে বাস্তব অভিজ্ঞতা নির্ভর। এখানে যাঁরা সাফল্য পেয়েছেন, তাঁরা নিজেরাই বলবেন কীভাবে তাঁরা বিনিয়োগ এনেছেন, কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন এবং রপ্তানি বাড়িয়েছেন।”
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের পর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটির সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছিলেন— সম্ভাবনাময় শিল্পক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাবতীয় জট কাটিয়ে বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করতে হবে। সেই সিদ্ধান্তের ফলাফলই হল এই ‘বিজনেস ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’, যা রাজ্যের শিল্প নীতিতে নতুন গতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিনের সিনার্জি বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ একাধিক দপ্তরের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।