রাজ্যে বিগত কয়েক বছরে ডিম উৎপাদনে রেকর্ড বৃদ্ধি সত্ত্বেও কেন বাজারে ডিমের দাম লাগামছাড়া—তার উত্তর খুঁজতে নেমেছে নবান্ন। হাঁস–মুরগির খাদ্যের বৃদ্ধি পাওয়া দামকেই ডিমের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর ও বাজারদর নিয়ন্ত্রণে গঠিত রাজ্যের টাস্ক ফোর্স।
বলা হচ্ছে, রাজ্যে ভুট্টাচাষ বাড়লেও তার বড় অংশ ইথানল তৈরিতে চলে যাচ্ছে। ফলে পোল্ট্রির খাদ্য উৎপাদনে ভুট্টার জোগান টান পড়ছে। তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে ডিমের দামে। যদিও ভুট্টাচাষ বাড়ার তথ্যও উঠে এসেছে, সঙ্গে হাঁস-মুরগির খাবার তৈরিতে রাজ্যের স্বনির্ভরতার অগ্রগতির কথাও স্বীকার করছে দপ্তর। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে—তাহলে খাদ্যের দামই বা বাড়ছে কেন?
এই কারণগুলিই খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পান্তের নেতৃত্বে বৈঠক করে রাজ্যের টাস্ক ফোর্স। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি ও কৃষি বিপণন দপ্তরের সচিবরা। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হলেও, ডিমের দাম বাড়ার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পায়।
বর্তমানে রাজ্যে ডিমের পাইকারি দর ৭ টাকা ৫ পয়সা, আর খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা করে। রাজ্য পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি জানান, “ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির ফলেই ৮ টাকায় ডিমের দাম আটকে রাখা গেছে। তবে নজর রাখতে হবে—কেউ যেন এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি না করে।”
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ডিমের গড় মূল্য ৫ টাকা ৭৪ পয়সা, যেখানে গতবছর তা ছিল ৫ টাকা ৬৫ পয়সা। এই পরিসংখ্যান ধরে বাজারদর বিশ্লেষণ করেছে টাস্ক ফোর্স।
ডিমের অতিরিক্ত মূল্যরোধ করতে পুলিশ ও টাস্ক ফোর্সকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের নাগালের মধ্যে রাখতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
রাজ্যে ৩৫টি সুফল বাংলা কেন্দ্র সন্ধ্যায়ও খোলা থাকবে
এর মধ্যে—
- ১৪টি কলকাতায়
- ২১টি বিধাননগর, রাজারহাট ও উত্তর ২৪ পরগনাতে
বর্তমানে রাজ্যে মোট ৭৫০টির বেশি সুফল বাংলা কেন্দ্র রয়েছে। এই মাসের শেষেই আরও ৫০টি মোবাইল ভ্যান যুক্ত হতে চলেছে।
সরকারের লক্ষ্য—সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পাওয়া নিশ্চিত করা এবং বাজারে অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা।