আসানসোলের ধসপ্রবণ এলাকা রানিগঞ্জ। খনি এলাকায় ধসে বসে গিয়েছে মাটি। ধস নেমে খনি এলাকায় দেখা দেয় বিশাল ফাটল। প্রায়শই গ্যাস ও ধোঁয়ায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। গত মঙ্গলবার রানিগঞ্জের পরিস্থিতির সঙ্গে জোশীমঠের তুলনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে। আদতে অবৈজ্ঞানিক এবং অবৈধ খননের ফলে প্রাণ হাতে বাস করছেন খনি অঞ্চলের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষ।
খনি বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কয়লা কাটা এবং অবৈধ খননই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। ভূগর্ভে কয়লা কেটে নেওয়ার পরে ফাঁপা অংশ বালি দিয়ে ভরাট করতে হয়। অথবা, খুঁটি দিয়ে উপরের অংশ ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়। তা ঠিক মতো না করলে ধসের সম্ভাবনা থাকে। অধিকাংশ সময় কয়লা তুলে নেওয়ার পর খনিগুলি ভরাট না করেই ফেলে রাখা হয়। তার জেরে প্রায় সময়ই রানিগঞ্জ এলাকায় ধস নামে বলে মনে করা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর একাংশের আবার অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পরে ইসিএল পুরনো খনিগর্ভগুলি বালি দিয়ে ভরাট করেনি। তার খেসারত দিতে হচ্ছে। উলটো দিকে, এর জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কাঠগড়ায় তুলেছে ইসিএল।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পরিত্যক্ত খনিগুলির দিকে নজর দেওয়া এবং ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু কেন্দ্র কর্ণপাত করে না। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে যতটা সম্ভব এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। বিপদ আসলে একসঙ্গে ২০–৩০ হাজার মানুষ তাতে পড়বে।’
জানা গিয়েছে, সাংঘাতিক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে খনি এলাকার শহর আসানসোল। শিল্পাঞ্চলবাসীর কাছে ধস, আগুনের ঘটনা নতুন নয় । প্রায়ই খনি এলাকায় নামে ধস, দেখা যায় পকেট ফায়ার। কখনও বাড়িতে ফাটল। কখনও রাস্তায় ফাটল। আতঙ্কে নিশ্চিন্তে ঘুমোতেও পারেন না খনি এলাকার বাসিন্দারা। বারে বারে ঘটেছে দুর্ঘটনা। বলি পড়েছে একাধিক প্রাণ। তবুও হয়নি সমস্যার সমাধান।