কলকাতা নাইট রাইডার্সে আর দেখা যাবে না ‘দ্রে রাসেল’-এর তাণ্ডব। সোনালি-বেগুনি জার্সিতে ১১ বছরের স্মৃতি, অসংখ্য ম্যাচ জেতানো ইনিংস, আর তিনটি আইপিএল ট্রফি— সব কিছুর পর কেকেআর শেষমেশ বিদায় জানাল আন্দ্রে রাসেলকে। দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য তারকাকে ছেড়ে দিয়ে মিনি নিলামের আগেই বড় বদলের ইঙ্গিত দিল নাইট ম্যানেজমেন্ট।
গত মরশুমে ১২ কোটিতে রাসেলকে রাখা হলেও পারফরম্যান্স ছিল আশানুরূপ নয়। ১৩ ম্যাচে করেন মাত্র ১৬৭ রান, সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫৭। নিয়মিত ইনজুরিও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে আইপিএল ২০২৬-এর আগে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেকেআর। রাসেলকে রিলিজ করায় তাঁর জন্য বরাদ্দ পুরো টাকাই এবার কেকেআরের পার্সে ফিরে আসবে। শুধু রাসেল নন— ভেঙ্কটেশ আইয়ার, কুইন্টন ডি কক, মঈন আলি, আনরিখ নখিয়া, রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও স্পেন্সার জনসনকেও রিলিজ করেছে শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফলে মিনি নিলামে প্রায় ₹৬৪.৩ কোটি নিয়ে নামবে কলকাতা— যা এই অকশনকে আরও আগ্রহজনক করে তুলবে।
কেকেআরের হয়ে রাসেল— এক অসামান্য যাত্রা
১৩৩টি ম্যাচে ২,৫৯৩ রান, স্ট্রাইক রেট ১৭৪.৯৭, গড় ২৮.৮১— আন্দ্রে রাসেলের পরিসংখ্যানই বলে দেয় তিনি কেকেআরের জন্য কতটা মূল্যবান ছিলেন। ২০১৯ সাল ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা— এক মরশুমে ৫১০ রান ও ১১ উইকেট। চলতি বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও আশা ছিল, অন্তত আইপিএলে কেকেআরের হয়ে তাঁকে দেখা যাবে। গত মরশুম শেষে তিনি বলেছিলেন— “ক্রিকেটে উত্থান-পতন থাকেই। আগামী মরশুমে আরও ভালো খেলতে হবে।” তবে বাস্তবে তা আর হচ্ছে না।
গত মরশুমের ভরাডুবির পর বড় পরিবর্তন কেকেআরে
আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সফল দল কেকেআর। ২০২৪ সালে শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বে গৌতম গম্ভীরের মেন্টরশিপে তৃতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গত মরশুমে একেবারে নিম্নগামী গ্রাফ— অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বে অষ্টম স্থানে শেষ। সেই ব্যর্থতার পরই দল গঠনে বড় পরিবর্তন আনতে তৎপর হয়ে ওঠে ম্যানেজমেন্ট।
ইতিমধ্যে কোচিং টিমেও রদবদল—
- হেড কোচ: অভিষেক নায়ার
- সহকারী কোচ: শেন ওয়াটসন
- বোলিং কোচ: টিম সাউদি
এবার খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও যে বড় রদবদল হবে, প্লেয়ার রিলিজ তালিকা থেকেই তা স্পষ্ট।
নতুন করে ঘর গোছাতে প্রস্তুত কেকেআর
প্রশ্ন এখন একটাই— রাসেলকে ছাড়ার পর তার জায়গা পূরণের জন্য কাকে টার্গেট করবে কেকেআর? কোন অলরাউন্ডার বা কোন ফিনিশারকে দলে টানবে? ₹৬৪ কোটি টাকার বিশাল পার্স নিয়ে কলকাতা নিশ্চয়ই বড় কোনও চমক রাখছে।