গুয়াহাটিতে দুঃস্বপ্ন নিয়ে ফিরল ভারত। পাঁচ দিনের টেস্টে প্রতিটি সেশনেই দাপট দেখিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত ৪০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিল—যা ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে ঘরের মাঠে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় হার। একই সঙ্গে ২৫ বছর পর ভারত সফরে প্রথমবারের মতো সিরিজ ক্লিন সুইপ করল প্রোটিয়াসরা।
ভারতের সাম্প্রতিক টেস্ট ফর্ম ভয়াবহ। শেষ সাতটি হোম টেস্টের পাঁচটিতে হার—যেখানে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত ছিল ‘অপরাজেয়’ দুর্গ। এই ম্যাচ ক্ষতটিকে আরও বড় করে দিল।
হার্মারের ঘূর্ণি: ভারতীয় ব্যাটিং হাল ধরা
শেষ দিনের সকালেই সাইমন হার্মার শুরু করে দেন ধ্বংসযজ্ঞ। কুলদীপ যাদব ও ধ্রুব জুরেলকে দ্রুত ফিরিয়ে ভারতকে চাপে ফেলেন। এরপর শুরু হয় একের পর এক পতনের গল্প।
বাদবাকি কাজটুকু করেন কেশব মহারাজ ও সেনুরান মুথুসামি।
হার্মার এদিন নেন ৬ উইকেট—যা ভারতের মাটিতে তাঁর প্রথম পাঁচ উইকেট। ধারাবাহিকভাবে চারবার এক উইকেটের জন্য আটকে যাওয়ার পর অবশেষে সম্পূর্ণ হল বহুদিনের অপেক্ষা। সিরিজে তাঁর মোট উইকেট ১৬—এককথায় বিধ্বংসী।
জাডেজার লড়াই, কিন্তু সঙ্গ পেলেন না কেউ
ভারতের হয়ে লড়াই চালান শুধু রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁর ৫৪ রান দলের একমাত্র উজ্জ্বল দাগ। কিন্তু একসময় মহারাজের বলে স্টাম্পড হয়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা জাডেজার ছবি যেন ভারতের বর্তমান টেস্ট ব্যাটিংয়ের প্রতীক।
সুদর্শনের ১৩৯ বলের প্রতিরোধও ব্যর্থ
সাই সুদর্শন দীর্ঘ সময় ধরে প্রোটিয়াস বোলিংকে প্রতিহত করলেও টি-পর্বের পরই প্রথম বলেই আউট হয়ে ফেরেন। তাঁর উইকেটটি তুলে নিয়ে ঐতিহাসিক রেকর্ডে নাম লেখান আইডেন মার্করাম—এক টেস্টে সর্বাধিক ক্যাচ (৯)।
দক্ষিণ আফ্রিকার নিখুঁত পরিকল্পনা
চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংস দীর্ঘায়িত করার সিদ্ধান্ত প্রথমে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও ম্যাচের শেষভাগে সেটাই বদলে দিল কাহিনি। ভারতকে ৫২২ রানের ম্যামথ লক্ষ্য দিয়ে প্রোটিয়াসরা নিশ্চিত করেছিল—তাদের বোলারদের সামনে ভারত আয়ু বাড়িয়ে টিকে থাকতে পারবে না।
মারকো ইয়ানসেন ম্যাচে ব্যাট-বলে অবদান রাখার পাশাপাশি শেষ উইকেটের জন্য দৌড়ে গিয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরে প্রোটিয়াসদের জয় মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে তুললেন।