কলকাতা: পিকে ব্যানার্জি এবং চুনী গোস্বামী চলে গিয়েছিলেন আগেই। বৃহস্পতিবার প্রয়াত হলেন তুলসীদাস বলরাম। এই তিনজনকেই ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরা তিন বলা হয়।
গত কয়েক মাস ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলরাম। প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি প্রয়াত হন। এ দিন দুপর ২.০৫-এ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্য়ু হয় তাঁর।
ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে সোনালি ত্রয়ী হলেন চুনী গোস্বামী, পিকে ব্যানার্জি ও বলরাম। তাঁকে সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসাবে গণ্য করা হয়। ১৯৬২ সালের এশিয়াড সোনা জয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম নক্ষত্র ছিলেন বলরাম। ওই বছরই তাঁকে অর্জুন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। শারীরিক সমস্যার জন্য পরের বছর মাত্র ২৭ বছর বয়সেই তিনি ফুটবলকে বিদায় জানান। দু’ বারের অলিম্পিয়ান বলরাম এর পর বিএনআর ও কলকাতা মেয়র্স টিমের কোচিং-এর দায়িত্ব নেন।
আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষ বলরাম। ১৯৩৬ সালে জন্ম সেকেন্দরাবাদের গ্রামে। চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেও ছোট্টবেলা থেকে ধরে রেখেছিলেন তাঁর ফুটবল- স্পৃহাকে। বিভিন্ন স্থানীয় ক্লাবে খেলার পর ১৯৫৬ সালে হায়দরাবাদের হয়ে সন্তোষ ট্রফিতে খেলেন।
ওই বছরই মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলে জায়গা পান বলরাম। কলকাতায় ফেরার পরই তাঁর দিকে নজর যায় ইস্টবেঙ্গল দলের। সেই বছরেই চলে আসেন কলকাতায়, যোগ দেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। বলরাম সেই থেকে বাংলারই হয়ে গেলেন। দক্ষিণ ভারত থেকে খেলতে এলেও বাংলা এবং কলকাতাকেই নিজের শহর মেনে গিয়েছেন বলরাম। থাকতেন উত্তরপাড়ায় গঙ্গার ধারে এক আবাসনের একচিলতে ফ্ল্যাটে।
৮৭ বছরের এই কিংবদন্তি ফুটবলার মাত্র ২৭ বছর বয়সেই তাঁর ফুটবল-জীবন শেষ করেছিলেন। পাননি পদ্ম-সম্মানও। সেই অভিমান নিয়েই তিনি বিদায় নিলেন।