কলকাতা: শাস্ত্রীয় সংগীত জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র উস্তাদ রাশিদ খানের জীবনাবসান। প্রস্টেট ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গত ২২ নভেম্বর থেকে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন প্রয়াত শিল্পী। মঙ্গলবার বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রয়াত হলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
গত মাসে সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর রাশিদ খানের স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে অন্য় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার অবস্থা ভালো হচ্ছিল।
রাশিদ খানের প্রয়াণে শোকের ছায়া সংগীতমহলে। তাঁর গানে বুঁদ হয়ে থাকতেন শ্রোতারা। জীবনের সব রং যেন তাঁর গানের মধ্যে ফুটে উঠত। তিনি গান শুরু করলে চারিপাশে যেন এক অলৌকিক মুহূর্ত তৈরি হত। দেশের অন্যতম সেরা শিল্পীদের তালিকায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছিলেন এই শিল্পী। রাশিদ খানের ছোট ছোট সরগরমের কারুকার্যে বারবার মুগ্ধ হয়েছেন শাস্ত্রীয় সংগীতের শ্রোতারা।
মূলত শাস্ত্রীয় সংগীত গাইলেও ফিউশনেও পারদর্শী ছিলেন ওস্তাদ রাশিদ খান। তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে বলিউড এবং টলিউডের গানও। শাহিদ কাপুর এবং কারিনা কাপুরের ছবি ‘যব উই মেট’-এর জন্য কণ্ঠ দিয়ে ‘আওগে যব তুম’-এর বন্দিশ সাজিয়েছিলেন, যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এ ছাড়াও ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘রাজ থ্রি’, ‘মান্টো’ এবং ‘শাদি মে জরুর আনা’-র মতো ছবিতে তিনি তার কণ্ঠের জাদু ছড়িয়েছিলেন।
উস্তাদ রাশিদ খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এটা সমগ্র দেশ ও সমগ্র সংগীত জগতের জন্য একটি বড় ক্ষতি। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে রাশিদ খান আর নেই’। মমতা আরও বলেন, মমতা বলেন, “রাশিদ ছিল আমার ভাইয়ের মতো। খুব ভাল সম্পর্ক ছিল আমাদের। বাংলা উর্দু মিশিয়ে মিষ্টি করে কথা বলত। ও আমাকে বলত, ‘তুমি আমার মা আছো’।’’
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের বাদাউনে জন্ম রাশিদ খানের। তিনি ছিলেন উস্তাদ গোলাম মুস্তফা খানের ভাগ্নে। তিনি নিজের মাতামহ উস্তাদ নিসার হুসেন খানের (১৯০৯-১৯৯৩) কাছ থেকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন। রাশিদ খান উস্তাদ রামপুর-সহসওয়ান ঘরানার গায়ক ছিলেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে নিজের প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স করেছিলেন।