রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে ইনিউমারেশন পর্ব। তার ঠিক চার দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ পাবে খসড়া ভোটার তালিকা। এরপরই শুরু হবে বিশাল 규모র শুনানি প্রক্রিয়া, যার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে ৯৯.৭৫ শতাংশ ইনিউমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজ করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ডিজিটাইজ হওয়া ফর্মের সংখ্যা ৭ কোটি ৬৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৮১। এখনও পর্যন্ত ৯,০৬৩টি ফর্ম বিলি করা যায়নি বলে কমিশন জানিয়েছে।
এ দিন পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল—২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের বা আত্মীয়ের নাম না থাকা অর্থাৎ আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ লক্ষে। এই ২৯ লক্ষ মানুষকে অবশ্যই শুনানির মুখোমুখি হতে হবে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ইআরওরা আনম্যাপড ভোটারদের একে একে নোটিশ পাঠাবেন।
নোটিশ পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে ইআরও-র অফিসে হাজির হয়ে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের কমিশন নির্ধারিত ১১টি নথির মধ্যে কোনও একটি জমা দিতে হবে। নথি দেখিয়ে পরিচয় প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে তাঁদের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, এমন বহু ভোটার রয়েছেন যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে ম্যাপিং হয়ে গেলেও তাঁদের ফর্মে বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। তাঁদেরও সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে শুনানিতে ডাকা হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র পেশ করতে হবে।
এই আবহেই কমিশনের কঠোর বার্তা—এসআইআর প্রক্রিয়ায় জাল নথি পেশ করলে কঠোর শাস্তি হবে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৩৩৭ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানার বিধান রয়েছে।
এদিকে খসড়া তালিকা থেকে এ দিন পর্যন্ত নাম বাদ পড়েছে ৫৭ লক্ষ ১ হাজার ৫৪৮। এর মধ্যে মৃত, দীর্ঘদিন স্থানান্তরিত এবং নিখোঁজ ভোটারদের নাম রয়েছে। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া কয়েক লক্ষ মৃত ভোটারের তালিকা সিইও অফিসে পাঠিয়েছে কমিশন; সেগুলি মিলিয়ে দেখা হবে।
ইনিউমারেশন শেষের প্রাক্কালে রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া যে আরও কঠোর, তথ্যভিত্তিক এবং পর্যবেক্ষণমূলক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, এই তথ্যই তা স্পষ্ট করে তুলছে।