প্রথম পাতা খবর যুবভারতীকাণ্ডে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ ছাড়লেন অরূপ বিশ্বাস, তদন্ত চলাকালীন দায়িত্বে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই

যুবভারতীকাণ্ডে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ ছাড়লেন অরূপ বিশ্বাস, তদন্ত চলাকালীন দায়িত্বে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই

20 views
A+A-
Reset

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের ঘটনার জেরে শেষ পর্যন্ত ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অরূপ বিশ্বাস। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো অরূপের ইস্তফাপত্র মঙ্গলবার গ্রহণ করা হয়েছে। আপাতত ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এই দফতরের দায়িত্বে থাকবেন।

অরূপ বিশ্বাস বর্তমানে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন। তবে যুবভারতীকাণ্ডের প্রেক্ষিতে তিনি কেবল ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর থেকেই অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তাঁর ইস্তফা গৃহীত হলেও তিনি মন্ত্রিসভায় বহাল থাকছেন বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অরূপ তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেন যে যুবভারতীর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী গঠিত তদন্ত কমিটি যাতে কোনও ধরনের প্রভাব ছাড়াই নিরপেক্ষ ভাবে অনুসন্ধান করতে পারে, সেই কারণেই তিনি ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চান। সোমবারের তারিখ দেওয়া সেই চিঠি মঙ্গলবার প্রকাশ্যে আনেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

ইস্তফার সিদ্ধান্তের পরেই ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের নবান্নে ডেকে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁরা নবান্নে পৌঁছন। তার পরই ক্রীড়া দফতর সূত্রে নিশ্চিত করা হয়, অরূপের ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে।

শনিবার যুবভারতীতে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলার পর থেকেই অরূপ বিশ্বাসের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, মাঠে মেসি উপস্থিত থাকার সময় তাঁর খুব কাছাকাছি ছিলেন অরূপ। সেই দৃশ্যের ছবি ও ভিডিয়ো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেসি মাঠ ছাড়ার পর ক্ষুব্ধ দর্শকদের একাংশ ভাঙচুর শুরু করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ঘটনার পর দলের অন্দরেও অরূপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়ে—ক্রীড়ামন্ত্রী কি পদত্যাগ করবেন? অবশেষে সেই জল্পনাই বাস্তব হল।

এদিকে যুবভারতীকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন, সেই কমিটি সোমবার রাতে নবান্নে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে একাধিক গাফিলতির কথা উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।

এই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমার, বিধাননগর পুলিশের কমিশনার মুকেশ কুমার এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিংহকে শো কজ় নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিধাননগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেবকুমার নন্দনকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ মেনে গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনিক মহলের মতে, SIT তদন্তে আরও তথ্য সামনে এলে এই ঘটনায় নতুন করে প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.