ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ধাপে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার থেকেই শুনানির জন্য ভোটারদের নোটিস পাঠানো শুরু হচ্ছে। কমিশন সূত্রে খবর, ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে কোনও যোগসূত্র দেখাতে না পারা মোট ৩০ লক্ষ ৫৯ হাজার ২৭৩ জন ‘নো-ম্যাপিং’ ভোটার— প্রত্যেকের কাছেই এই নোটিস পাঠানো হবে।
নোটিস পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ভোটারদের সাত দিনের সময় দেওয়া হবে। কোথায় ও কখন শুনানি হবে, তা নোটিসেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুনানির সময় ভোটারদের পরিচয় ও যোগ্যতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি পেশ করতে হবে।
‘নো-ম্যাপিং’ ভোটারদের পাশাপাশি কমিশনের নজরে রয়েছে আরও বিপুল সংখ্যক ভোটার। প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ভোটারদের নাম খসড়া তালিকায় থাকলেও, তাঁদের এনুমারেশন ফর্মে দেওয়া তথ্য কমিশনের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে। সেই কারণেই প্রথম পর্যায়ে বুথ স্তরের আধিকারিকরা (বিএলও) তাঁদের তথ্য যাচাই করবেন। যাচাইয়ের পরও যাঁদের ক্ষেত্রে সন্দেহ দূর হবে না, কেবল তাঁদেরই শুনানির জন্য ডাকা হবে।
কমিশন জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি পর্ব চলবে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় একাধিক স্থানে শুনানির ব্যবস্থা থাকবে। শুনানির সময় প্রামাণ্য নথি হিসেবে কমিশন আগেই ১৩টি নথির তালিকা নির্ধারণ করেছে। প্রয়োজনে একাধিক নথি দেখাতে হতে পারে ‘নো-ম্যাপিং’ বা সন্দেহজনক তালিকাভুক্ত ভোটারদের।
নির্ধারিত দিনে কোনও ভোটার শুনানিতে হাজির হতে না পারলে কী হবে— তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বাসযোগ্য কারণ দেখাতে পারলে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। পাশাপাশি, ৮৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের ক্ষেত্রে বাড়িতে শুনানির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল।
এসআইআর প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক তৎপরতা যেমন বেড়েছে, তেমনই সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও উদ্বেগ ও কৌতূহল— দুটোই বাড়ছে। কমিশনের দাবি, স্বচ্ছ ও নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির লক্ষ্যেই এই শুনানি প্রক্রিয়া।