রাজা রায় : বাংলা নিজের মেয়েকে চায়— এবারের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের অন্যতম জনপ্রিয় স্লোগান ছিল এটি। শোনা যায়, এই স্লোগান আইপ্যাকের কর্ণধার পিকে মস্তিষ্কপ্রসূত। তবে ভোটে তৃণমূলের ঝোড়ো জয়ের পর এই স্লোগানের দাবি পশ্চিমবঙ্গের গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। কিছুটা রকম ফের হয়ে তা এখন ভারতের একাংশের দাবি। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাইছেন অনেকে। টুইটারে একাধিক হ্যাসট্যাগও চলছে।
ভোটের পর আইপ্যাকের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইপ্যাককে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেটা চেয়েছেন। আগামী পাঁচ বছর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই কাজ করবে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। অর্থাৎ ২০২৪-এর লোকসভা এবং ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনও প্রশান্তের তত্ত্বাবধানেই লড়বে জোড়াফুল শিবির।
মিশন ২০২৪-এর লক্ষ্যে ঘুঁটি সাজানোর কাজ রাজ্যে বিধানসভা ভোট মেটার পরই শুরু করে দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিছুদিন আগেই মহারাষ্ট্রে গিয়ে দেখা করছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে। প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। পরে বৈঠকে যোগ দেন শরদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেও। বৈঠক করেছেন শাহরুখ খানের সঙ্গেও।

শিবসেনা, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলো আস্তে আস্তে সব একজোট হচ্ছে। স্ট্যালিন, কেজরিওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেছন পিকে। দু’জনের সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক বেশ ভালো। এ সবটাই পিকে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে।
পশ্চিমবঙ্গে জয়ের পর বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, যে ভাবে ‘সোনার বাংলা গড়তে’ আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছিলেন বিজেপির দিল্লির নেতারা তাতে জোর ধাক্কা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ভোটকৌশলী হিসাবে এই কাজে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন পিকে। এবার লক্ষ্য দিল্লির কুর্সি। তৃতীয় ফ্রন্ট গঠিত হবে কিনা বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা তা সময় বলবে। তবে পিকে যে ২০২৪-এ ফসল তোলার জন্য এখন থেকে বীজ বপনের কাজ শুরু করেদিয়েছেন, তা তাঁর সাম্প্রতিক সক্রিয়তা দেখেই স্পষ্ট হয়।