Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$ID is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 46

Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$post is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 47
"রেখো মা দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে…", দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে প্রণাম - NewsOnly24

“রেখো মা দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে…”, দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে প্রণাম

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

শত শত বছরের প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল সেই সময়ে রামায়ণ,মহাভারতের আলোচ্য চরিত্রগুলি।বিশেষ করে রামায়ণের রামের মাহাত্ম্য কীর্তির বর্ণনা সমুহ।

সারা ভারতবর্ষের সাথে সাথে এই বাংলার পরম্পরাতেও ছিল রঘুকুলপতি রামচন্দ্রের একাধিপত্য।

এহেন বাতাবরণে প্রথম বিপরীতে যিনি তাঁর সৃষ্টিকে এক অনন্যসাধারণ উপস্থাপনায় অমর ইতিহাস রচনা করেছিলেন, তিনি হলেন এক ঐতিহাসিক অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। এই “অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ” বিশেষণটি দিয়েছিলেন সেই সময়ে স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়। আর অবিভক্ত বাংলার যশোরের কপোতাক্ষ নদীর তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামের রাজনারায়ণ দত্ত এবং জাহ্নবী দেবীর অবাধ্য সন্তান মধুসূদন দত্ত।

অবাধ্য কেন? কারণ, মধুসূদনের জীবনের নিজস্ব স্টাইল।তিনি সংস্কৃত ভাষাকে মনে করতেন পুরুতঠাকুরদের ভাষা,আর সেইসময়কার বাংলা ভাষাকে মনে করতেন চাকর,ভৃত্যদের ভাষা। সদ্য হিন্দু কলেজের (এখনকার প্রেসিডেন্সি কলেজ ইউনিভার্সিটি) হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও-র অন্যতম ছাত্র মধুসূদন স্বপ্ন দেখতেন ইংরাজি সাহিত্যের কবি হবেন। তাই তিনি গ্রহন করলেন খ্রীস্টধর্ম। হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

তারপর ভারত থেকে চলে গেলেন বিদেশে।শেষে ফ্রান্স হয়ে ফিরলেন স্ত্রী হেনরিয়েটা ও সন্তানদের নিয়ে ভারতে। বিখ্যাত ভারতপ্রেমী ড্রিঙ্কিনওয়াটার বীঠন্, যাকে আমরা বেথুন সাহেব বলে জানি,তিনি মাইকেল-কে বললেন, যে মাইকেল যেন তাঁর নিজের মাতৃভাষায় কাব্য রচনা করেন,বাংলা ভাষায় যেন সাহিত্য সৃজন করেন।

সেই হল শুরু।ক্যাপটিভ লেডি থেকে সম্পূর্ণ বিপরীতে তিনি চলে গেলেন।রচিত হল একের পর এক আধুনিক বাংলা ভাষার কাব্য সাহিত্য।মেঘনাদ বধ মহাকাব্য রচিত হল অমিত্রাক্ষর ছন্দে বাংলা ভাষায় প্রথম। বাংলা ভাষায় তথা ভারতীয় সংস্কৃতিতে এসে উপস্থিত হলেন পাশ্চাত্যের সাহিত্য-কাব্য সম্ভার–লর্ড বায়রন,মিলটন,শেক্সপিয়ার, হোমার,দান্তে,চসার,প্রমুখরা।

বাংলা ভাষায় জন্ম নিল এক সাহিত্যিক-কাব্যিক বলিষ্ঠতা। শুধু তাই নয়,মাইকেল মধুসূদন এদেশের সাহিত্যে,কাব্যে প্রতিষ্ঠিত করলেন সমাজের সেই দিকটির মানুষদের কথা যারা ছিলেন অবহেলিত, উপেক্ষিত।

যেমন সারা ভারতবর্ষের ইতিহাসে রামের একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে মাইকেল মধুসূদন দত্ত মেঘনাদ বধ মহাকাব্যতে প্রতিষ্ঠিত করলেন অনার্য রাবনকে,রাবনের বীর পুত্র মেঘনাদকে,মেঘনাদ আর তার স্ত্রী প্রমিলার ভালোবাসাকে,ইত্যাদি ইত্যাদি। রামকে তিনি বীরত্বের আসন দিলেন না। সঠিকভাবে ভাবলে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঠিকই বিশ্লেষণ করেছিলেন। এই বিদ্রোহী কবি বাংলাভাষায় এক নবদিগন্তের উদ্বোধন ঘটিয়েছিলেন।
আর এই বৈপ্লবিক ঘটনা মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘটিয়েছিলেন আজ থেকে ১৭০ বছর আগে।এটাই আমাদের কাছে এক বিস্ময়কর জিনিস।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্মেছিলেন আজ থেকে ২০০ বছর আগে। আজ সেই ২০০ বছর আগের জন্মগ্রহণ করা অগ্নিশিশুর দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে জানাই আমাদের বিনম্র প্রণাম।

আমাদের বাংলা ভাষার আজকের যে বিশ্বব্যাপী সমাদর,তা মোটেই ঘটতো না,যদি আমাদের একটা মাইকেল মধুসূদন দত্ত না থাকতেন।

তিনিই বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্য-কাব্য ইতিহাসে এক বিশাল প্রস্তর ফলক,যে প্রস্তর ফলকের গায়ে লিপিবদ্ধ করা আছে…” রেখো মা দাসে রে মনে,এ মিনতি করি পদে….প্রবাসে দৈবের বশে,জীবতারা যদি খসে,মধুহীন কোরো নাকো তব মন কোকনদে…”।

বিনম্র প্রণাম শ্রী মধুসূদন, মাইকেল মধুসূদন…

Related posts

লোকসঙ্গীতের অনির্বাণ আলো আব্বাসউদ্দীন আহমদ: জন্মের ১২৫ বছরে ফিরে দেখা

বিহারের এনডিএ-র জয় তৃণমূলের উদ্বেগের কারণ হতে পারে?

জেদের জয়: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বজয় নারীসত্তার সাহসিকতার প্রতীক