Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$ID is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 46

Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$post is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 47
চাঁদের পালকে লেখা পবিত্র খুশির 'ঈদ মোবারক' - NewsOnly24

চাঁদের পালকে লেখা পবিত্র খুশির ‘ঈদ মোবারক’

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিভিন্ন জায়গার মতো এই বাংলার মাটিতেও দিকে দিকে পবিত্র ঈদ পালিত হয় আনন্দ আর খুশির হাত ধরে। সকলের সাথে সম্প্রীতির আলিঙ্গনের মধ্যে দিয়ে।
রমজান মাসের শেষ দিনে সূর্য অস্ত যেতে না যেতেই সকলে তৃষিত নয়নে তাকিয়ে থাকেন,চেয়ে থাকতেন পবিত্র ঈদের চাঁদ দেখার জন্য। প্রত্যাশিত দিনে চাঁদ দেখতে না পেলে পরেরদিন সন্ধ্যায় চাঁদ উঠলে সকলে খালিচোখে চাঁদ দেখে দোয়া+ দরুদ্ পড়তেন। বাড়ির মহিলারা শাড়ির আঁচল দিয়ে সেদিকে আবার দেখতেন।কাপড়ের ভিতর দিয়ে দেখা গেলে বুঝতে হোত সেটা দ্বিতীয়ার চাঁদ। ঈদের চাঁদ আসলে উঠেছিল আগের দিনের সন্ধ্যায়,তাদের চোখে ধরা পড়েনি সেই চাঁদ।

মহানবী হযরত্ মোহাম্মদ্ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত্ করার পর পবিত্র ঈদ পালনের রীতিনীতির প্রচলন হয়।প্রথম ঈদ্- উল্-ফিতর্ এর নমাজ আদায় করে হিজরি দ্বিতীয় সনে। ইংরেজি সাল গণনায় ৬২৪ খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাসের শেষের কোনও একটি দিন।সেই দিনটিই পবিত্র খুশীর ঈদ হিসাবে পালন করা হয়েছিল। আমাদের বাংলাতে পবিত্র ঈদ পালন শুরু হয়েছিল ১২০০ খ্রীস্টাব্দে ( সুত্র- শামসুজ্জামান শেখ/ প্রাক্তন মহা পরিচালক, বাংলা একাডেমি / উইকিপিডিয়া)।

ঈদের দিন সকালে উঠে স্নান করে নতুন জামাকাপড় পরে নমাজ পড়তে যাওয়ার তাগিদ আর তাড়ার কথা স্মৃতি থেকে জানালেন সাহিত্যিক আনিসুজ্জামান। তাড়াটা আসলে ময়দানে গিয়ে প্রচুর মানুষের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়ে নমাজ পড়ার আনন্দ।আহা বুকের মধে সারাবিশ্বের সাড়া পাওয়া যায় তখন।

সে এক অনন্যসাধারণ খুশি। সেই খুশি আরও আরও উচ্ছ্বাসে পরিণত হয়,যখন পোলাও,কোর্মা,জর্দা সেমাই সহ অন্যান্য খাবার দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন, প্রীতিসম্মেলন হয়,সেটাই তো পবিত্র খুশির ঈদের অন্যতম অঙ্গ।

গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে কলকাতার ভবানীপুরে সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী শামসুন নাহার মাহমুদের বাড়িতে আয়োজিত এক ঈদের সম্মেলনে মধ্যমণি ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম, তাঁর প্রিয় বন্ধু লেখক শৈলজারঞ্জন মুখোপাধ্যায় এবং খ্রীশ্চান ধর্মের শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ। আরও ছিলেন বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি।
পবিত্র ঈদের এমনই ইতিহাস।এমনই ঐতিহ্য, এমনই পরম্পরা।

উৎসব মানে অসহায় সহ-নাগরিকদের প্রতি সামাজিক মানবিক দায়িত্ব পালন করাও। প্রতি বছর নিজের দেশে ফিরতেন বিশ্ব বিখ্যাত সেতার শিল্পী উস্তাদ বিলায়েত খান। কলকাতায়,পার্ক সার্কাসে, শাহরানপুরে, দুঃস্থ, অনাথ, অসহায়দের নিয়ে আনন্দে,সকলের সাথে মিলেমিশে পবিত্র খুশীর ঈদ পালন করতেন। এমনকি বহু অসহায় গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়েরও বন্দোবস্ত করতেন।গরীবদের উপার্জনের সংস্থান করে দিতেন।

ঈদের চালচিত্রে মানবিক সম্পর্কগুলি স্বাদে গন্ধে প্রার্থনায় উন্নত হয়ে ওঠে মানবিক আলোর রোশনাইতে পবিত্র ঈদের দিনে।

১৯৩২ সালে বাংলায় প্রথম ইসলামী সঙ্গীত তৈরী করলেন কাজী নজরুল ইসলাম — “ও মন, রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ রে,/ আপনাকে আজ বিলিয়ে দে,শোন্, আসমানী তাগিদ রে..”।

এই গানটি গেয়েছিলেন ২৩ বছরের দুই যুবক,তাদের নাম ছিল বিখ্যাত লোকশিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমেদ এবং সত্য চৌধুরী।

আবার আসছে আমাদের প্রাণের উৎসব পবিত্র ঈদ।প্রস্তুত মনের প্রাণের নকশীকাঁথা। যেখানে শুধুই একে অপরকে সম্প্রীতির বন্ধনে আপন করে নিয়ে বলবো–” পবিত্র খুশীর ঈদ মোবারক”।

সকলের আনন্দে মিশে যাবে আমার আপনার আনন্দের স্রোতধারা। সবাই ভালো থাকুন।ঈদ মোবারক।

Related posts

লোকসঙ্গীতের অনির্বাণ আলো আব্বাসউদ্দীন আহমদ: জন্মের ১২৫ বছরে ফিরে দেখা

বিহারের এনডিএ-র জয় তৃণমূলের উদ্বেগের কারণ হতে পারে?

জেদের জয়: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বজয় নারীসত্তার সাহসিকতার প্রতীক