প্রথম পাতা প্রবন্ধ আমাদের আবেগের তিনটি রং…

আমাদের আবেগের তিনটি রং…

588 views
A+A-
Reset

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

আগস্ট মানেই আমাদের দেশের মানুষের মনের মধ্যে স্বাধীনতার আন্দোলনের সেই ঐতিহাসিক আবেগ। ১৫ ই আগস্ট দোরগোড়ায়। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের মুল কেন্দ্রেই থাকে শত শত শহীদের রক্তে রাঙানো আমাদের দেশের স্বাধীনতার পতাকা। যে পতাকাকে সামনে রেখে একদিন ভারত মায়ের বীর সন্তানরা নিজেদের অমূল্য জীবন আত্মাহুতি দিয়েছেন,সেই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকায় লেখা থাকে আপামর দেশবাসীর প্রাণের আবেগ। আমাদের দেশের মানুষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস।

এই আবেগ,এই জাতীয় পতাকা এবং আমাদের এই কলকাতা…তার সম্পর্ক কিন্তু বহুদিনের। আমাদের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের এবং জাতীয় পতাকার পথচলা শুরু হয়েছিল এই কলকাতা শহরের বুক থেকেই।

স্বামী বিবেকানন্দের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ডঃ ভুপেন্দ্রনাথ দত্ত, তাঁর “ভারতের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম” বইটির প্রথম খন্ডে তখনকার দিনের অন্যতম পত্রিকা “সঞ্জীবনী” (যার সম্পাদক ছিলেন কৃষ্ণ কুমার মিত্র/যিনি সম্পর্কে ছিলেন শ্রী অরবিন্দের ছোট মেসোমশাই) পত্রিকাকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন সেই সময়ের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল অবিভক্ত বাংলার কথা– ১৯০৬ সালের ৭ ই আগস্ট গ্রীয়ার পার্কে ( আজকের সাধনা সরকার উদ্যান) ভারতের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। “সঞ্জীবনী” পত্রিকায় তার বিবরণ পাওয়া যায়…” সবুজ,পীত ও লাল জমির উপর প্রথম লাইনে আটটি পদ্ম, দ্বিতীয় লাইনে সংস্কৃত অক্ষরে বন্দে মাতরম,এবং শেষ লাইনে সূর্য ও অর্ধচন্দ্রাকৃতিই জাতীয় পতাকার চিহ্ন হইয়াছিল।”

সেই সময়কার ভারতবর্ষের প্রদেশগুলির প্রতিভু হিসাবেই আটটি পদ্ম ও চন্দ্র সূর্য-এর মতো প্রতীকের সংযোগে এই পতাকাটিকে ভারতবাসীর স্বাধীনতার এবং তার প্রতিনিধিত্ব-এর প্রথম প্রয়াস হিসাবেই ইতিহাস মান্যতা দেয়। পাশাপাশি এই পতাকাটি “ক্যালকাটা ফ্ল্যাগ” নামেও ক্ষেত্র বিশেষে পরিচিত ছিল।

পরে এই পতাকার অনেক পরিবর্তন হয়।সেই পরিবর্তন করেছিলেন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জন।যেমন ভগিনী নিবেদিতা, মাদাম কামা,প্রমুখরা। বহু বিবর্তন-এর মধ্য দিয়ে আজকের সেই পতাকা আজ আমাদের দেশের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত, অশোকচক্র শোভিত জাতীয় পতাকায় রূপ পেয়েছে। সেই পতাকার তিনটি রঙের প্রতি আমাদের আবেগ এক ঐতিহাসিক ঐতিহ্য-এর পরম্পরা যেন।যেন সেই পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে উচ্চারণ করতে ইচ্ছে হয়….
বন্দেমাতরম…. জয়হিন্দ….।

সারে জাঁহা সে আচ্ছা হিন্দস্তাঁ হামারা হামারা….।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.