Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$ID is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 46

Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$post is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 47
জেদের জয়: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বজয় নারীসত্তার সাহসিকতার প্রতীক - NewsOnly24

জেদের জয়: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বজয় নারীসত্তার সাহসিকতার প্রতীক

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “সরলা” কবিতায় লিখেছিলেন—
“নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার, কেন নাহি দিবে অধিকার, হে বিধাতা?”

সভ্যতার পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি, যা কিছু অর্জন—তার অর্ধেকই তো নারীর নিজস্ব স্বকীয়তায় ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত। একথাই কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়—
“এ জগতে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চিরকল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

সম্প্রতি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয় তারই এক ঐতিহাসিক, অনন্যসাধারণ নিদর্শন।
২০২৫ সালের ২রা নভেম্বর, মুম্বাইয়ের ডি.ওয়াই. পাতিল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ভারতের মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। সেদিন গোটা ভারতবর্ষ সারারাত জেগে ছিল। ভারতীয় মহিলা দল বিশ্বকাপ জেতার পর রাস্তায়, গলিতে, ছাদে ছাদে মানুষ নেমে এসেছিল এক অদম্য জেদে, এক অসাধারণ আত্মপ্রত্যয়ে। এটি কেবল একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল না—এটি ছিল লিঙ্গসমতার দাবিতে এক প্রতীকী জয়, ছিল পুরুষশাসিত সমাজে নারীর আত্মপ্রত্যয়ের গর্জন।

প্রতিটি খেলোয়াড়ের চোখে-মুখে সেদিন ছিল জয়ের ক্ষুধা, ছিল অদম্য জেদ। এই জেদই তাদের বিশ্বজয়ের পথে নিয়ে গেছে—তাই এটি নিঃসন্দেহে “জেদের জয়”।

২রা নভেম্বরের সেই রাতে শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের চোখে ছিল একই উজ্জ্বলতা, মনের মধ্যে একই স্নায়ু উত্তেজনা। যেন প্রতিটি ভারতীয় মেয়ের দীর্ঘদিনের অপমান, বঞ্চনা, বিদ্রুপ আর অবহেলা সেদিন ব্যাট-বল-ফিল্ডিংয়ের ভাষায় প্রতিশোধ নিচ্ছিল।

এই জয় শুধুমাত্র একটি ক্রিকেট ট্রফির নয়—এটি নারীসত্তার জয়, সম্মানের জয়, এবং সর্বোপরি জেদের জয়।
মনে পড়ছিল “কোনি” ছবির ক্ষীদ্দার শ্লোগান—“ফাইট, ফাইট, কোনি, ফাইট!” কিংবা “চক দে ইন্ডিয়া”-র খেলোয়াড়দের অদম্য ইচ্ছাশক্তি।

এই দলের মেয়েরাও তেমনই—খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সমাজের নানা তিরস্কার, কটূক্তি, বাধা উপেক্ষা করে তারা নিয়মিত অনুশীলন করেছে, কারণ তাদের মধ্যে ছিল স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার অঙ্গীকার।

স্বপ্ন কোনো লিঙ্গ বোঝে না—স্বপ্নের একটাই ধর্ম, তাকে বাস্তবায়িত করতে হয় জেদ ও নিষ্ঠায়।

আজকের এই বিশ্বজয় তাই শুধুই একটি ট্রফি নয়—এটি ভারতীয় নারীসত্তার সাহস ও প্রতিজ্ঞার প্রতীক। তারা যেন বলেছে—“বাধা যতই আসুক, স্বপ্ন যদি সত্য হয়, জেদ যদি অটল থাকে, তবে জয় অবশ্যম্ভাবী।”

অভিনন্দন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের প্রত্যেক সদস্যকে—
হরমনপ্রীত কাউর (অধিনায়ক), দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষ (উইকেটরক্ষক), রাধা যাদব, শেফালী ভার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, জেমাইমা রড্রিগেজ, হারলিন দেওল, তেজল হাসাবনিস, প্রিয়া পুনিয়া, প্রতীকা রাওয়াল, পূজা ভাস্ত্রাকার, আমনজ্যোতি কাউর, দয়ালান হেমলতা, সজীবন সাজানা, যষ্টিকা ভাটিয়া, উমা ছেত্রী, স্নেহা রানা, শ্রেয়াঙ্কা পাটিল, প্রিয়া মিশ্র, আশা শোভনা, রেনুকা সিং ঠাকুর, সীমা ঠাকর, অরুন্ধতী রেড্ডি, শায়লী শাতসাড়ে, ক্রান্তি গৌড় ও কাশভী গৌতম।

এই জয় তাদেরই, যারা ইতিহাস রচনার সাহস করেছে।
মিতালি রাজ ও ঝুলন গোস্বামীর মতো পথপ্রদর্শকদের ধন্যবাদ জানাই, যাঁদের লড়াই থেকেই শুরু হয়েছিল এই পথচলা।

এগিয়ে যাক ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল—নতুন ইতিহাস রচনার লক্ষ্যে।

Related posts

লোকসঙ্গীতের অনির্বাণ আলো আব্বাসউদ্দীন আহমদ: জন্মের ১২৫ বছরে ফিরে দেখা

বিহারের এনডিএ-র জয় তৃণমূলের উদ্বেগের কারণ হতে পারে?

ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ভগৎ সিংকে বাঁচালেন বীরাঙ্গনা দুর্গা ভাবী! কে তিনি? জানুন স্বাধীনতার আড়ালে এক অজানা ইতিহাস