রাজা রায় : রাজ্য বিজেপিতে অরাজকতা চলছে? একের পর এক নেতারা যে ভাবে বিস্ফোরক মন্তব্য করে ফেলছেন, দেখেশুনে সে রকমই মনে হচ্ছে।
ক’দিন আগেই রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন যুব নেতা সৌমিত্র খাঁ ফেসবুক লাইভ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
অদ্ভুতভাবে তাকে গুরুত্বই দিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বললেন, ‘‘ওর কথা আমি সিরিয়াসলি নিচ্ছি না।’
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও কার্যত তাঁকে সমর্থন করে বললেন, ওর বয়স অল্প সেইজন্যেই তো ওকে যুব নেতা করা হয়েছে।
আবার বাংলা ভাগের দাবি নিয়ে যখন জন বারলা এবং নিশীথ প্রামাণিকরা আওয়াজ তুলছেন। তাকে সমর্থন করছেন না দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপির রাজ্যের উচ্চস্তরীয় নেতারা।
কেউ কেউ বলছেন এটা বিজেপির কৌশল। বিভাজনের নয়া রাজনীতি। হতে পারে।
তবে একের পর এক নেতা যেভাবে নিজের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্রকাশ করছেন, তাতে সত্যিই আগামী দিনে দলের কাছে এ এক সিঁদুরে মেঘ।
মন্ত্রীত্ব খুইয়ে আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘‘ধোঁয়া উঠলে কোথাও তো আগুন লেগেছে। বন্ধু, অনুরাগী ও সংবাদমাধ্যমের কাছে জানাতে চাই, আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। আমি সেটা করেছি।”
এটা দলীয় সিদ্ধান্ত, বিরোধীতা থাকলে তা দলের মধ্যেই করা উচিত। কিন্তু তা না করে ফেসবুকে লাইভ করে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।
কেন? তবে কী দলের নিজের কথা বলার সুযোগ নেই? দম বন্ধ পরিবেশ?
যে সমালোচনা এতদিন তারা তৃণমূল কংগ্রেস বিরুদ্ধে করে এসেছিল, সেই আকাশে ছুড়ে দেওয়া থুতু কী এখন তাদের গায়ে এসে পড়ছে?
শুক্রবার দিলীপ ঘোষ বলেছেন, দলে অন্য গাছের ছাল লাগিয়ে ছিল এখন তা খসে খসে পড়ছে।
ভোটের আগে যখন অন্য গাছে ছাল গায়ে লাগিয়ে নিয়েছিলেন তখন কী এই বোধদয় হয়নি। ভোটে হারার পর বোধদয় হল।
তখন তো দিব্বি উত্তরীয় পরিয়ে, হাতে পতাকা দিয়ে দলে নিয়ে নিয়েছিলেন।
তৃণমূল থেকে যারা বিজেপি গিয়েছিলেন তারা আবার ফিরে আসার জন্য উসখুশ করছেন। বুঝতে পারছেন কোথায় বেশি দম বন্ধ করা পরিবেশ।
তাই আপাতত রাজ্য সরকারের বিরোধিতা ছেড়ে, দলটা সামলানোতে জোর দেওয়া উচিত দিলীপ ঘোষেদের।
আরও পড়ুন
প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক সারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়