প্রথম পাতা প্রবন্ধ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি সুপার ফ্লপ, প্রমাণ করল বাংলা

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি সুপার ফ্লপ, প্রমাণ করল বাংলা

424 views
A+A-
Reset

রাজা রায় : মান্না দের সেই গানটা মনে পড়ছে, ‘ এ নদী কেমন নদী! জল চাই একটু যদি, দু হাত ভরে শুকনো বালু দেয় আমাকে।’

বাংলা দখলের জন্য তৃষ্ণার্ত বিজেপি ভেবে ফেলেছিল এবার পশ্চিমবঙ্গ বুঝি সেই যদি নদী যেখানে চাইলেই জল মিলে যাবে। হয়তো যেত !  কিন্তু, মানুষের সমস্যা কথাকে সেভাবে সামনে না এনে ‘জল চাওয়া’র মধ্যে বিভাজনে রাজনীতির সুর মিলিয়ে ভুলটা করে ফেলেছে বিজেপি। ভোটের ফলে শুধু ‘শুকনো বালি’ মিলেছে।

বাংলার সংস্কৃতিকে বুঝতে ভুল হয়ে গিয়েছে বিজেপির। এখানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বাস করে। ইদের সিমাই দিব্বি চলে যায় হিন্দুদের ঘরে। আবার নতুন জামা পরে বন্ধু অনামিকার সঙ্গে দিব্বি দুর্গা ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়ে আমিনা।

এখানে সুকুমারের সঙ্গে দিব্বি প্রেম করে বিয়ে করে তহমিনা। এই বিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন মেনে না নিলেও তাদের অন্তত জেলে যাওয়ার ভয় থাকে না। কিন্তু বাংলায় বিজেপি মানুষের মধ্যে সেই ভয়টা ঢুকিয়ে দিয়েছিল।

কী খাব-কী খাব না, কী জামা কাপড় পরবো, কী ভাবে পরবো — সবেতে একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। এটা মেনে নেয়নি বাংলা।

চায়ের দোকানে কামারহাটি এলাকার বাসিন্দা এক মুসলিম ধর্মাম্বলম্বী মানুষের সঙ্গে কথা কথা হচ্ছিল।  তখন ভোট হতে মাস খানেক বাকি। তিনি বলছিলেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে দাদা! আগে অন্য রাজ্যে থাকা আত্মীয়ের বলতাম, পশ্চিমবঙ্গে একটা সম্প্রীতির পরিবেশ আছে। এখানে নিশ্চিন্তে থাকা যায়। আর কী তা বলতে পারব।’’ ঠারেঠোরে তার ইঙ্গিত ছিল বিজেপির দিকে। তখন এমন একটা পরিস্থিতি ছিল কিছু বুঝতে পারছিলাম না কী হবে।  তাও গলায় ভেতর জোর এনে বলেছিলাম বাংলায় এটা হবে না।

বিধানসভা পর্যালোচনা জন্য  বেশ কয়েকটি জেলায় গিয়েছিলাম। সেখানেও দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও কথা বলে বুঝেছি, সাম্প্রদায়িক বিভাজনরেখা মনের মধ্যে থাকলেও সেটি প্রকট হয়নি। বরং তার জায়গায়, বিভিন্ন স্থানীয় সমস্যা, বেকারত্ব এ সব প্রসঙ্গই বেশি করে তারা বলতে চেয়েছেন। তবুও বিজেপি ধর্মীয় রাজনীতির তাস খেলে গিয়েছে।

দলবদুল এক বিজেপি নেতা সাম্প্রদায়িক তাস খেতে গিয়ে বলেছিলেন,  ‘তৃণমূল ক্ষমতায় এলে সবাইকে লুঙ্গি পরতে।’ উনি কি জানেন না, এখনও বহু হিন্দুতে বাড়িতে পুরুষ ঘরে লুঙ্গি পরে। চাষিরা মাঠে চাষ করে লুঙ্গি পরে। হিন্দু শ্রমিক বা রিক্সাচালক লুঙ্গি পরেই তার পেশাতে যোগ দেন। তবু উনি এটা বলে দিলেন। একটা বিভাজন আতঙ্ক তৈরির চেষ্টায়। যাই হোক এই কথটা নানুরে এক হিন্দু কৃষককে বলে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আপনিও কি তাই মনে করেন?’  তিনি হেসে বলেছিলেন, লুঙ্গি কেনার টাকা হাতে থাকলে তো কিনব।’  তারপর বাকি উত্তর ২ মে দিয়ে দিল বাংলা।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.