কোচবিহার সফর শেষ করেই সোজা হাসপাতালে ছুটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্য—অস্ত্রোপচারের পর বিশ্রামে থাকা জীবনমুখী গানের স্রষ্টা নচিকেতা চক্রবর্তীর খোঁজ নেওয়া। কয়েক দিন আগে আচমকা বুকে ব্যথা অনুভব করায় পার্ক সার্কাসের একটি ডায়গনস্টিক সেন্টারে রুটিন চেকআপ করাতে যান গায়ক। পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলে তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয় আরও কিছু পরীক্ষা করানোর। তাতেই ধরা পড়ে হৃদযন্ত্রে ব্লকেজ। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অস্ত্রোপচারের, এবং শনিবার তাঁর হৃদযন্ত্রে দু’টি স্টেন্ট বসানো হয়।
বর্তমানে বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নচিকেতা। তাঁর শারীরিক অবস্থার খবর পেয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বিকেলে হাসপাতাল পৌঁছে চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্পী আপাতত স্থিতিশীল এবং চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নচিকেতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। পুজোর মরশুমে এক অনুষ্ঠানে গায়ককে সুস্থ থাকার জন্য খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখতে কড়া পরামর্শ দিতে শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। শিল্পীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ার খবর শুনে এবারও তিনি অভিভাবকের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অস্ত্রোপচারের ঠিক পরেই ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়েছেন বলেও জানা যায়।
শীতের মরশুমে একের পর এক অনুষ্ঠান নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন নচিকেতা। ফলে বিশ্রামের ঘাটতি হচ্ছিল প্রবল মাত্রায়। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধরা পড়ে হৃদযন্ত্রে জটিলতা। চিকিৎসকের পরামর্শে তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং দ্রুত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলা জীবনমুখী গানের জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতা ‘নীলাঞ্জনা’, ‘ডাক্তার’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনির্বাণ’–এর মতো গান দিয়ে এখনও শ্রোতাদের মন জয় করেন। বয়স ও শরীরের ধকলের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা দিলেও জনপ্রিয়তার ঝলক রয়েছে অটুট। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি তাঁর ও তাঁর পরিবারের কাছে নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি।
শিল্পীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন ভক্তরা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কবে তাঁকে ছুটি দেওয়া যাবে।