বলিউডে শোকের ছায়া। প্রয়াত প্রবীণ অভিনেতা সতীশ। শনিবার বিকেল আড়াইটে নাগাদ কিডনি বিকল হওয়ার কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
তাঁর বন্ধু পরিচালক অশোক পণ্ডিত এ খবর জানিয়ে বলেন,“অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় বন্ধু এবং অসাধারণ অভিনেতা সতীশ আজ বিকেল ২টা ৩০ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন কিডনি বিকলের কারণে। বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আজই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক বিরাট ক্ষতি।”
অশোক পণ্ডিত আরও বলেন, “আমি যখন পিয়ুষ পাণ্ডের শেষকৃত্য থেকে ফিরছিলাম, তখনই পরিবার থেকে খবর পাই সতি̀শের মৃত্যু হয়েছে। আমি তাঁর সঙ্গে বহু প্রজেক্টে কাজ করেছি। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।”
১৯৫১ সালের ২৫ জুন মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন সতীশ। কচ্ছি গুজরাতি পরিবারে জন্ম হলেও বলিউডে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা।
১৯৭৮ সালে ‘Arvind Desai Ki Ajeeb Dastaan’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তাঁর। তবে প্রকৃত পরিচিতি পান ১৯৮৩ সালের কাল্ট স্যাটায়ার Jaane Bhi Do Yaaro-এর মিউনিসিপ্যাল কমিশনার ডি’মেলো চরিত্রে।
এরপর দীর্ঘ চার দশকের কেরিয়ারে ২৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি—
Hum Saath Saath Hain (১৯৯৯),
Kal Ho Naa Ho (২০০৩),
Mujhse Shaadi Karogi (২০০৪),
Om Shanti Om (২০০৭) প্রভৃতি।
টেলিভিশনে কিংবদন্তি উপস্থিতি
সতীশ শুধু সিনেমাতেই নয়, টেলিভিশনেও ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়।
১৯৮৪ সালের কালজয়ী সিটকম Yeh Jo Hai Zindagi-তে প্রতিটি পর্বে আলাদা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জিতে নেন তিনি।
পরে তিনি অভিনয় করেন বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে, যেমন—
- Filmy Chakkar (১৯৯৫)
- Sarabhai vs Sarabhai (২০০৪) — যেখানে তাঁর ইন্দ্রবদন সরাভাই চরিত্র দর্শকের মনে চিরস্থায়ী হয়ে গেছে।
রত্না পাঠক শাহর সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রিও পেয়েছিল বিপুল প্রশংসা।
সিনেমা ও টেলিভিশনের বাইরে সতীশ ছিলেন বিভিন্ন কমেডি শো-এর বিচারক ও পরামর্শদাতা, যেমন Comedy Circus-এর মতো জনপ্রিয় রিয়েলিটি প্রোগ্রামে তিনি বিচারকের আসন সামলেছেন।
বিনোদন জগতের সহকর্মী, অভিনেতা ও দর্শকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করছেন। এক যুগের হাসির মানুষ, যিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আনন্দ দিয়েছেন, রেখে গেলেন এক অমলিন স্মৃতি।