ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদে উত্তপ্ত বিতর্ক, কল্যাণ-সহ ১০ বিরোধী সাংসদ সাসপেন্ড

ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদের যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) বৈঠকে শুক্রবার তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের তর্কাতর্কি চরমে ওঠে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, ১০ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয় এবং বৈঠক মুলতুবি রাখা হয় আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।

গত ২১ জানুয়ারি জেপিসির শেষ পর্যায়ের সফর শেষ হয় লখনউতে। এরপর ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি বৈঠকের নোটিস দেওয়া হয়। বিরোধীরা বৈঠকের তারিখ পিছিয়ে ৩০-৩১ জানুয়ারি করার অনুরোধ জানান, কিন্তু তা সরকারি ভাবে গৃহীত হয়নি। ২৩ জানুয়ারি বিরোধী সাংসদেরা দিল্লিতে পৌঁছন। মঙ্গলবার বৈঠকে জানানো হয়, ২৪ জানুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের সাংসদদের বক্তব্য শোনা হবে এবং ২৭ জানুয়ারি অন্যান্যদের। বিরোধীরা এত তাড়াহুড়োর কারণ জানতে চাইলে বিতর্ক চরমে ওঠে এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “সংসদে চূড়ান্ত অসংসদীয় পরিবেশ চলছে, জেপিসিকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে।” অন্যদিকে, নিশিকান্ত দুবে বিরোধীদের দোষারোপ করে বলেন, “ওরা ইচ্ছাকৃতভাবে বৈঠকে গোলযোগ সৃষ্টি করছে।”

গত বছর ৮ আগস্ট কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেন। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, বিলটি সংবিধানবিরোধী এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে। নতুন আইনে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে তুলে দেওয়া হবে, যা বিরোধীদের মতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।

বর্তমান আইনে ওয়াকফ বোর্ডের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা যায় না, তবে নতুন বিলে সেই ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। এছাড়া, ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে, যা বিরোধীদের আপত্তির অন্যতম কারণ।

বিতর্ক চলতে থাকলেও আগামী ২৭ জানুয়ারি ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে এবং তার পরেই চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।

Related posts

বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান ২০২৫ ঘোষণা, কারা পেল কোন পুরস্কার?

পুজোয় নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

ফাইনালের আগে সুপার ওভার থ্রিলারে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রিয়েলিটি চেক পেল ভারত, চিন্তা বোলিং নিয়ে