আধার-মোবাইল লিঙ্কের ক্ষেত্রে শীর্ষে বাংলা। এমনকি অনেকটাই পিছিয়ে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি নয়, বরং রিপোর্ট দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক সংস্থাই। আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করানো বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। অথচ, এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে কয়েক কদম এগিয়ে। এই কাজে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, অসম, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ডের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে রিপোর্ট।
নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলার একাধিক ‘সামাজিক কল্যাণ প্রকল্প’ এই সর্বাধিক সংযোগের কারণ। এক শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্য সাথী, কন্যাশ্রী ইত্যাদির মতো বেশ কয়েকটি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বর্তমানে চালু রয়েছে বাংলায়। এই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা নিতে হলে আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর যোগ করা বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই প্রচুর মানুষ এই সংযোগ করেছেন। কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে ১৬,৭৪,২৪৫ জন মানুষ মোবাইলের সঙ্গে তাদের আধার লিঙ্ক করেছেন। যেখানে উত্তর ২৪ পরগনার প্রায় ১০,৯৮,৩৯৯ জন লিঙ্ক করিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ৭,৮৫,৩১৯ জন লিঙ্ক করে এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক একটি প্রতিযোগিতা চালু করেছিল যেখানে এই কাজের সঙ্গে সেরা পারফরম্যান্স করা ব্যক্তিদের উদ্দিপ্ত করার জন্য স্কুটার উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। ডাক বিভাগ জানিয়েছে, মোট ২২৬টি স্কুটার পুরস্কৃত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ১৮৯টি পশ্চিমবঙ্গ সার্কলের কর্মীরা পেয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এসবকেও ছাপিয়ে গিয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প। নবান্নের এক কর্তার বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে গত বছর ২,৫০০টি দুয়ারে সরকার শিবির থেকে পুরো বিষয়টি সম্পন্ন করেছে। এই শিবিরগুলি থেকে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষীর ভাণ্ডার বা কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্পে সাধারণ মানুষ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এর জন্য পরিবারের প্রতিটি সদস্য আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করেছেন। ফলে বিজেপি শাসিত অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে পশ্চিমবঙ্গ এই ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ডাক বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে ৪৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাঁদের মোবাইল নম্বর আধারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন। সেখানে কর্ণাটক প্রায় ১৮ লক্ষ নম্বর লিঙ্ক করেছে। গুজরাত মাত্র ৬ লক্ষ সংযোগের লক্ষ্যমাত্রা পার করতে পেরেছে।