সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারাল বণিক পরিবারের সাতজন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে সদ্যজাত-সহ চার শিশু। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন একজন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বংশ পরম্পরায় বাজি তৈরির কাজ করত বণিক পরিবার এবং তাদের বাজি তৈরির বৈধ লাইসেন্সও ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার রায়পুরের তৃতীয় ঘেরি এলাকায় বসবাস করত বণিক পরিবার। পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ১১। চন্দ্রকান্ত বণিক ও তুষার বণিক দুই ভাই। সোমবারের বিস্ফোরণে তাঁদের বাবা অরবিন্দ বণিক (৬৫), ঠাকুরমা প্রভাবতী বণিক (৮০), চন্দ্রকান্তের স্ত্রী সান্তনা বণিক (২৮), দুই সন্তান অর্ণব (৯) ও অস্মিতা (৮ মাস), তুষারের দুই সন্তান অনুষ্কা (৬) ও অঙ্কিত (৬ মাস) মারা গিয়েছে। তুষারের স্ত্রী আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। পরিবারটির তিনজন সদস্য তখন বাড়ির বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হতে থাকে বাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এর মধ্যেই একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ ও দমকল বাহিনী। উদ্ধারকাজ শুরু হয় রাতেই।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বাজি মজুত থাকা থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। সঙ্গে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার, যা বিস্ফোরণকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। যদিও বণিক পরিবারের বৈধ বাজি তৈরির লাইসেন্স ছিল, তবুও বসতবাড়িতে বিপুল পরিমাণ বাজি মজুত রাখা কতটা নিরাপদ ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের ভূমিকাও তদন্তের আওতায় এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার আরও কিছু বাড়িতে বাজি তৈরির কাজ চলে। প্রশাসনের তরফে বারবার নিষেধ করা হলেও কেন এই বিপজ্জনক কার্যকলাপ চলছিল, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।