পানিহাটি ও বীরভূমের পর এবার বারাকপুরে আত্মঘাতী গৃহবধূ, অভিযোগ এনআরসি ও এসআইআর আতঙ্কেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন ৩৩ বছরের কাকলি সরকার। ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বারাকপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে, কেজি স্কুল রোডের মনসা মন্দির এলাকার কাছে। মৃতার বাড়ি বাংলাদেশে নবাবগঞ্জে, ১৫ বছর আগে সবুজ সরকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দুই সন্তানের মা কাকলি কিছুদিন ধরেই মানসিক চাপে ছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই এনআরসি ও এসআইআর প্রসঙ্গে চিন্তিত ছিলেন কাকলি। পরিবার জানিয়েছে, তিনি বারবার বাংলাদেশ ফিরে যাওয়ার কথা বলছিলেন। তাঁর স্বামী সবুজ সরকার জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি শান্ত হলে তাঁকে নিয়ে যাবেন, কিন্তু কাকলি সেই অপেক্ষা করতে চাননি।
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন কাকলি। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় স্বামী সবুজ সরকার, শ্বশুর সুরেশ সরকার এবং ভাসুর শান্তি সরকারকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে পরিবার এনআরসি আতঙ্কের কথা বললেও, অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃতার শাশুড়ি দাবি করেছেন, “পুত্রবধূ এসআইআর আর এনআরসি-র চিন্তায় ভুগছিল। বারংবার বলত, ‘আমার নাম বাদ যাবে।’ তাই বাংলাদেশ যেতে চেয়েছিল।”
তবে স্থানীয় কাউন্সিলর বলেন, “ঘটনাটি আত্মহত্যা হলেও এনআরসি বা এসআইআর নিয়ে কোনও কথা আমার সঙ্গে হয়নি। পুলিশ তদন্ত করছে।”
এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে— এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোটার তালিকা ও নাগরিকত্ব নিয়ে আতঙ্ক কতটা গভীর হচ্ছে।