শিশুসন্তানকে ছুড়ে ফেলে বছর তেইশের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকা বাগদার থেকে শুক্রবার অভিযুক্ত BSF জওয়ানদের গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার তাঁদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল বনগাঁ মহকুমা আদালত।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে একতরফা সিদ্ধান্তে বিএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকার পরিধি বাড়িয়েছে, তাতে এমন ঘটনা আরও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিবাদে রবিবার বাগদায় সভা করবে তৃণমূল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার জিতপুর বর্ডার আউটপোস্টের কাছাকাছি এলাকায় সীমান্ত পেরনোর চেষ্টা করছিলেন বছর তেইশের ওই তরুণী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বামী ও দুই সন্তান। তাঁরা আদতে উত্তর ২৪ পরগনারই বসিরহাটের ত্রিমোহিনী এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের কাছে করা অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, তাঁরা রাতের অন্ধকারে সীমান্তের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই সীমান্ত এলাকায় পাহারার দায়িত্ব বিএসএফের ৬৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের। ওই রাতে বিএসএফ-কর্মীদের টর্চের আলোয় ওই তরুণীদের গতিবিধি টের পেয়ে যায় বিএসএফ।
পুলিশের কাছে ওই তরুণী জানিয়েছেন, এর পর ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে ওই তরুণী আশ্রয় নেন সীমান্তবর্তী একটি কাঁকরোল ক্ষেতে। কাঁকরোলের মাচার নীচে তিনি যখন সন্তান নিয়ে লুকিয়ে, তখনই এক BSF কনস্টেবল তাঁদের দেখতে পান টর্চের আলোয়। এর পর তিনি ওই তরুণী এবং তাঁর শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পৌঁছন বিএসএফের এএসআই পদমর্যাদার এক অফিসার। তিনি পোস্ট কমান্ডার। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই এএসআইয়ের নির্দেশেই তাঁর অধিনস্থ কনস্টেবল তরুণীকে ধর্ষণ করেন।
শনিবার তাদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে দু’জনকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম আলতাফ হোসেন এবং এস পি চেরো। তাঁরা বিএসএফের ৬৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কর্মরত। ঘটনার পর তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখাপত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ আগামীকাল আমরা বাগদায় কর্মসূচী নিয়েছি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাহিনী এটি। অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী একবার ক্ষমা চান।এর প্রতিবাদে সারা বাংলায় কেন্দ্রীয় শাসকের রাষ্ট্রশক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। বিএসএফকে আমরা সরাতে চাইনি। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এখন বিজেপি সিকিউরিটি ফোর্স হয়েছে। এটা মানতে পারব না আমরা।’’
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে, অজানা গন্তব্যে ক্ষমতাসীন জোটের বিধায়করা