ভোটার বিন্যাসের পরিবর্তনে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১৪ হাজার নতুন বুথ বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে রাজ্যে বুথের সংখ্যা যেখানে ৮০ হাজারের সামান্য বেশি, সেখানে নতুন সংযোজনের পর তা দাঁড়াবে প্রায় ৯৪ হাজারে। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার বুথ বিন্যাস নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতর। বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
ভোটারের স্বার্থে অতিরিক্ত বুথ চায় তৃণমূল
বৈঠকের পরে অরূপ বিশ্বাস স্পষ্ট জানান, তৃণমূল বুথ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে না। তবে তাঁর শর্ত, “অতিরিক্ত বুথ যেন একই ভোটকেন্দ্রেই হয়। ভোটারকে যেন দু’কিলোমিটার দূরে গিয়ে ভোট দিতে না হয়।”
এছাড়াও তিনি বলেন, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর)-এর প্রসঙ্গ নিয়ে কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে।
এসআইআর নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি
অরূপ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, “কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। রেফারি যদি ঠিক না হয়, তবে কীভাবে হবে? কোনও রাজনৈতিক দলকে খুশি করার জন্য এসআইআর-এর নামে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলতে পারে না।”
তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর হলে তা হবে জনবিরোধী সিদ্ধান্ত। তিনি সতর্ক করে বলেন, “প্রয়োজনে ১০ লক্ষ মানুষ নিয়ে আমরা কমিশনে যাব।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার টিএমসিপির সমাবেশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই হুঁশিয়ারি দেন।
বিরোধীদের অভিযোগে পাল্টা অবস্থান
তৃণমূল যেখানে দাবি করছে কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে, সেখানে বিরোধীরা বুথ বিন্যাস প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির পক্ষ থেকে শিশির বাজোরিয়া অভিযোগ করেন, বুথ লেভেল অফিসার নিয়োগে তৃণমূলের প্রভাব রয়েছে। তবে শাসকদলের বক্তব্য, এসআইআর বা বুথ পুনর্বিন্যাস যেন কোনওভাবেই “ভোটাধিকার খর্বের চক্রান্ত” না হয়।
শাসকদল তৃণমূল বুথ সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে সরাসরি আপত্তি না জানালেও, কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষত এসআইআর প্রসঙ্গে তৃণমূলের হুঁশিয়ারি স্পষ্ট করে দিল, ভোটাধিকার খর্বের আশঙ্কা তারা কোনওভাবেই মেনে নেবে না। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কমিশনের ভূমিকা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।