ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় এসেও পশ্চিমবঙ্গে জাঁকিয়ে শীতের দেখা নেই। কলকাতা ও তার আশপাশে রাত-ভোরে হালকা ঠান্ডার আমেজ থাকলেও দিনের বেলায় সেই শীত উধাও হয়ে যাচ্ছে। পারদ এখনও ১৫ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে, ফলে কবে শীত জাঁকিয়ে বসবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, এখনই রাজ্যে জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা নেই। বরং চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে, উত্তর-পূর্ব ভারতে অসম ও সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তান সংলগ্ন জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলেও রয়েছে আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত। উত্তর-পশ্চিম ভারতের উপর দিয়ে বইছে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা এবং বুধবার নতুন করে আরও একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আবহাওয়াগত পরিস্থিতির জেরেই বাংলায় শীতের গতি কিছুটা থমকে রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ থেকে সাত দিনে তাপমাত্রায় বড় কোনও পতনের সম্ভাবনা নেই। রাত ও ভোরে শীতের অনুভূতি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা বাড়বে। কোনও কোনও জেলায় সকালের দিকে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যেতে পারে, তবে আপাতত কোথাও ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়নি।
দক্ষিণবঙ্গে চলতি সপ্তাহে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকার সম্ভাবনা। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ভোরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ০.৭ ডিগ্রি বেশি। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা রয়েছে ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রির মধ্যে।
উত্তরবঙ্গেও জাঁকিয়ে শীত এখনও অধরা। উত্তরের পাঁচ জেলায় সমতলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তবে পার্বত্য এলাকাগুলিতে শীতের দাপট তুলনামূলক বেশি। বুধবার ভোরে দার্জিলিঙে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৫ ডিগ্রি, কালিম্পঙে ১০.৩ ডিগ্রি, আলিপুরদুয়ারে ৯ ডিগ্রি, কোচবিহারে ৯.৬ ডিগ্রি এবং জলপাইগুড়িতে ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সব মিলিয়ে, আপাতত বাংলায় শীতের দাপট বাড়ার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়া থাকবে মূলত শুষ্ক, বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই বলেই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।