ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপি কার্যত ‘শাঁখের করাত’-এর মধ্যে। দলেরই এক সাংসদ প্রকাশ্যে দলের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। তাঁর মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে রাজ্য নেতৃত্ব।
তমলুকের বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরাসরি বলেন, “বিজেপি আদৌ তৃণমূলকে হারাতে চায় কি না, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে।”
এই মন্তব্যে শুক্রবার থেকেই উত্তাল বঙ্গ বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে তড়িঘড়ি কোর কমিটির বৈঠক ডেকে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে—রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য শীঘ্রই অভিজিৎবাবুর সঙ্গে কথা বলবেন এবং তাঁর কাছ থেকে এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইবেন।
সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, “মোদি সরকারের কার্যকলাপ দেখে মনে হয়েছে, কেন্দ্র বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি বদলাতে চায় না।”
তিনি আরও সমালোচনা করেন হিন্দি বলয়ের নেতাদের প্রচারে পাঠানোর সিদ্ধান্তের, বলেন—“হিন্দি বলয়ের নেতারা বাংলার মানুষকে বোঝেন না। এখানকার জলহাওয়া, মানুষ উত্তর ভারতের মতো নয়। দিল্লির নেতাদের এনে ভোটে জেতা অবাস্তব ভাবনা।”
এছাড়া, বঙ্গে ৩৫৫ ধারা জারি প্রসঙ্গে বিজেপির নীরবতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তমলুকের সাংসদ।
বিজেপির একাংশের মতে, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎবাবু “আবেগপ্রবণ মানুষ”, হয়তো আবেগের বশে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন। তবে এই বক্তব্যের জন্য তাঁকে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ওয়াকিবহাল মহলের মত, সবটাই নির্ভর করছে শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের উপর। যদি তিনি ব্যাখ্যায় রাজ্য নেতৃত্বকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তাহলে বিষয়টি আপাতত দলের অভ্যন্তরেই মিটে যেতে পারে। তবে, বিজেপির রাজ্য রাজনীতিতে এই মন্তব্য একটি বড় অস্বস্তি তৈরি করেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।