প্রথম পাতা খবর কলকাতার ফুটপাতে সাত মাসের শিশুর ওপর নৃশংস অত্যাচার, অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত

কলকাতার ফুটপাতে সাত মাসের শিশুর ওপর নৃশংস অত্যাচার, অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত

318 views
A+A-
Reset

কলকাতার বড়তলায় সাত মাসের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিশেষ পকসো কোর্ট। মঙ্গলবার বিকেলে বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। নির্যাতিতার মৃত্যু না হলেও যে নৃশংস অত্যাচার তার ওপর চালানো হয়েছে, তা সর্বোচ্চ শাস্তির উপযুক্ত।

অভিযুক্ত রাজীব ঘোষকে (৩৪) পকসো আইন ছাড়াও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৮, ১৩৭ (২), ১৪০ (১) এবং ১৪০ (৪) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। ৮০ দিনের মধ্যেই মামলার শুনানি শেষ করে আদালত দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ৩০ নভেম্বর বড়তলা থানা এলাকায় ফুটপাথে বসবাসকারী এক দম্পতির সাত মাসের শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়। কয়েক ঘণ্টা পর, রাস্তার ধারে কান্নারত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায় এবং যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মেলে।

তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৪ ডিসেম্বর অভিযুক্ত রাজীব ঘোষকে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৬ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়, যেখানে ১৩ পাতার রিপোর্ট এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছিল।

সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, “অজস্র সিসিটিভি ফুটেজ, আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকদের বক্তব্য, ফরেনসিক রিপোর্ট এবং অভিযুক্তের ডিএনএ নমুনা— সবকিছু মিলিয়ে এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। শিশুটির পোশাকে পাওয়া অপরাধের নমুনার সঙ্গে অভিযুক্তের ডিএনএ মিলে গিয়েছে, যা চূড়ান্ত প্রমাণ।”

ডিসি (উত্তর) দীপক সরকার বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই মামলার তদন্ত করেছি। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা, তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ছিল। ৭৮ দিনের মধ্যে এই মামলার রায় দেওয়া হয়েছে, যা একটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা।”

সরকারি আইনজীবীর মতে, সাধারণত মৃত্যুদণ্ডের রায় নির্যাতিতার মৃত্যুর ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। কিন্তু এই মামলায় আদালত স্পষ্ট করেছে, একজন শিশুর সঙ্গে এত নৃশংস আচরণ তার সারাজীবনের জন্য ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি ডেকে এনেছে। তাই এই শাস্তিই উপযুক্ত বিচার।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.