অবশেষে পুলিশের জালে ‘বিষাক্ত’ কফ সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’-এর প্রস্তুতকারী সংস্থা শ্রীসান ফার্মাসিউটিক্যালস-এর মালিক এস রঙ্গনাথন। বহু শিশুর প্রাণ কেড়ে নেওয়া এই কফ সিরাপ কাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ছিলেন পুলিশের খোঁজে। তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ২০ হাজার টাকা।
সূত্রের খবর, বুধবার মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু জুড়ে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। সেই অভিযানে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করা হয় রঙ্গনাথনকে। গ্রেফতারের আগে তাঁকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ায় শেষ পর্যন্ত হাতকড়া পরানো হয় তাঁকে।
জানা গিয়েছে, ‘কোল্ডরিফ’ কফ সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে ২০ জনেরও বেশি শিশু মারা গেছে। সামান্য জ্বরের পরেই শিশুদের কিডনি বিকল হয়ে যাচ্ছিল। ভয়াবহ এই ঘটনাকে ঘিরে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সিরাপটিতে রয়েছে ৪৮.৬ শতাংশ ডাইথিলিন গ্লাইকল, একটি অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। চিকিৎসকদের মতে, এই রাসায়নিক মানবদেহে গেলে কিডনি বিকল হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে তা মারাত্মক প্রাণঘাতী।
একাধিক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক নড়েচড়ে বসেছে। বুধবার কেন্দ্রের অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস (DGHS) রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, “প্রতিটি ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থা যেন তাদের পণ্যের রাসায়নিক উপাদানগুলি যথাযথভাবে পরীক্ষা করে এবং নিরাপত্তা মান বজায় রাখে।”
এদিকে, সিরাপ কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি। তাঁর আবেদন, সুপ্রিম কোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক।
এই ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। শিশুদের মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠছে— কীভাবে এমন বিপজ্জনক রাসায়নিক ওষুধ বাজারে আসতে পারল, এবং নজরদারির অভাব কোথায়?