ক্ষতিপূরণের নির্দেশ, স্যালাইন বিতর্কে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা

স্যালাইন বিতর্ক মামলায় চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হীরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে অবিলম্বে রিঙ্গার্স ল্যাক্টেট স্যালাইনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

জনস্বার্থ মামলায় আদালত জানিয়েছে, যারা এই স্যালাইন ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে, কোন কোন রোগী ইতিমধ্যেই এই স্যালাইন ব্যবহার করেছেন। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল নামক সংস্থার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে কেন্দ্রকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।

রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁরা আগেই এই স্যালাইন ব্যবহার বন্ধ করেছে। তবে আদালত জানতে চায়, রাজ্য কি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাকে নোটিস পাঠিয়েছে? রাজ্যের আইনজীবী জানান, এই মর্মে কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি।

মামলাকারীর আইনজীবী অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালে আলিপুরদুয়ারের এক চিকিৎসক এই স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, যার ফলে রাজ্য তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। কর্নাটকে এই সংস্থাকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হলেও, পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের কাজ করার অনুমতি দেয়।

বিচারপতির মন্তব্য, “একটি রেস্তোরাঁয় ফুড সেফটি অফিসার যদি পচা মাংস দেখতে পান, তবে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাহলে স্যালাইনের ক্ষেত্রে কেন ব্যবস্থা নিতে এত দেরি হলো?” আদালত আরও প্রশ্ন তোলে, “যে মুহূর্তে একজন রোগী মারা গেলেন, তখনই তো নোটিস জারি করা উচিত ছিল। এত দেরি কেন?”

রাজ্যের আইনজীবী যুক্তি দেন, “এক রাতে ত্রিশ হাজার স্যালাইন বন্ধ করা সম্ভব নয়।” আদালত রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩০ জানুয়ারি।

Related posts

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, সব মামলাতেই মুক্তি—জেলমুক্তি কবে?