নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিংয়ের একাধিক এলাকা। পাহাড়জুড়ে ধসে থমকে গিয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক আপাতত বন্ধ, এবং বহু জায়গায় ধসে মাটির নিচে চাপা পড়েছে রাস্তা ও ঘরবাড়ি। শনিবার রাতের ভয়াবহ বৃষ্টিতে দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের পার্বত্য জেলাগুলিতে কার্যত বেসামাল অবস্থা।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যবাহী হেরিটেজ টয় ট্রেন পরিষেবায়। বহু জায়গায় ট্রেন লাইনের নিচের মাটি সরে গিয়েছে, কোথাও বা লাইনের উপরেই ধস নেমেছে। ফলে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং এবং দার্জিলিং থেকে নিউ জলপাইগুড়ি—দু’দিকের পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (DHR)।
দুর্যোগের পর থেকেই টয় ট্রেন পরিষেবা স্থগিত রয়েছে। DHR কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে, এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
পাহাড়ে বেড়াতে এসে টয় ট্রেন না চড়ার কষ্টে হতাশ বহু পর্যটক। কারণ, টয় ট্রেন দার্জিলিংয়ের অন্যতম আকর্ষণ। দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটক এই ঐতিহাসিক ট্রেনে চড়তে দার্জিলিং আসেন।
তবে পুরোপুরি বন্ধ নয় পরিষেবা—দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত জয়রাইড ট্রেন চালু রাখা হয়েছে। পর্যটকরা চাইলে এই ছোট দূরত্বের জয়রাইড উপভোগ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
DHR-এর অধিকর্তা ঋষভ চৌধুরী বলেন, “ধসের কারণেই আপাতত সব ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কখন থেকে স্বাভাবিক পরিষেবা শুরু করা সম্ভব হবে। তবে পর্যটকরা দার্জিলিং-ঘুম জয়রাইড উপভোগ করতে পারবেন।”
কোন ট্রেনগুলি বন্ধ থাকছে
ধসের জেরে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত মূল পরিষেবার পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তিনটি জনপ্রিয় স্পেশাল ট্রেন—
- শিলিগুড়ি থেকে রংটং পর্যন্ত T & Timber Special Joyride,
- দার্জিলিং–কার্শিয়াং Hill Special,
- কার্শিয়াং–মহানদী Sunrise Special।
এই বিশেষ ট্রেনগুলি পর্যটন মরশুমে চালু করা হয়েছিল, যাতে পর্যটকরা পাহাড়ি সৌন্দর্য ও টয় ট্রেনের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এই পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে।