প্রথম পাতা খবর দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় বিস্ফোরণে সন্ত্রাসযোগ সন্দেহ, এনআইএ-র তদন্ত শুরু

দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় বিস্ফোরণে সন্ত্রাসযোগ সন্দেহ, এনআইএ-র তদন্ত শুরু

63 views
A+A-
Reset

দিল্লির হৃদয়ে সন্ত্রাসের ছায়া। সোমবার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি সাদা হুন্ডাই আই২০ (i20) গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত আটজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঘটনার পর গোটা এলাকা কাঁপিয়ে দেয় বিস্ফোরণের শব্দ। মুহূর্তের মধ্যে আগুনে পুড়ে ছারখার গাড়িটি, ছিটকে পড়ে দগ্ধ দেহাংশ ও ধ্বংসাবশেষ। চারদিক জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের দ্রুত লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল (LNJP)-এ ভর্তি করা হয়।

 কীভাবে ঘটল বিস্ফোরণ

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাড়িটি বিস্ফোরণের আগে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লালকেল্লার কাছে পার্ক করা ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে—

  • দুপুর ৩টা ১৯ মিনিটে গাড়িটি সুনেহরি মসজিদের পার্কিংয়ে প্রবেশ করে।
  • সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে বেরিয়ে আসে।
  • মাত্র ৪ মিনিট পর, ৬টা ৫২ মিনিটে, গৌরীশঙ্কর ও জৈন মন্দিরের মাঝে পৌঁছে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।

তদন্তে উঠে এসেছে, গাড়ির ভিতরে তিনজন ছিলেন— তিনজনই বিস্ফোরণে নিহত। ফুটেজে দেখা গেছে, চালক ছিলেন নীল-কালো টি-শার্ট পরা এক যুবক। বিস্ফোরণের আগ পর্যন্ত কেউই গাড়ি থেকে নামেননি।

তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, এটি একটি আত্মঘাতী হামলা, এবং জঙ্গিরা হয়তো কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশের অপেক্ষায় ছিল।

 তদন্তে নেমেছে একাধিক সংস্থা

ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তিনি জানান, এনআইএ, দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেল, এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো যৌথভাবে তদন্তে নেমেছে।

শাহ বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হবে না।”

দিল্লি পুলিশ UAPA ধারায় মামলা দায়ের করেছে। দেশের বিভিন্ন শহর— মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, লখনউ ও জয়পুরে জারি হয়েছে উচ্চ সতর্কতা।

পুলওয়ামা যোগসূত্রে নজর

তদন্তকারীরা এই বিস্ফোরণের সঙ্গে পুলওয়ামা জঙ্গি নেটওয়ার্কের সম্ভাব্য যোগসূত্র খতিয়ে দেখছেন। গাড়িটি হরিয়ানার সলমন নামে এক ব্যক্তির নামে রেজিস্টার্ড ছিল। তিনি জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে গাড়িটি বিক্রি করেন।
তদন্তে জানা গেছে, গাড়িটি পরবর্তীতে পুলওয়ামার তারিক নামের এক ব্যক্তির কাছে গিয়েছিল, তবে মালিকানা স্থানান্তর করা হয়নি।

সূত্রের দাবি, সন্দেহভাজন আত্মঘাতী চালক ছিলেন পুলওয়ামার চিকিৎসক ড. উমর মোহাম্মদ, যিনি ধৃত দুই জঙ্গি ড. মুজাম্মিল শাকিল ও ড. আদিল রাথার-এর ঘনিষ্ঠ। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দিন সকালে তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে তিনি আতঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটান।

ফরিদাবাদেও উদ্ধার বিস্ফোরক

একই দিনে, দিল্লির কাছেই ফরিদাবাদে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 রাজধানীতে বাড়ছে সতর্কতা

ঘটনার পর লালকেল্লা চত্বর ও আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলেছে বিপুল পুলিশ ও সিআরপিএফ বাহিনী। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও মেট্রো স্টেশন।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আশঙ্কা করছে, উৎসবের মরসুমে রাজধানী লক্ষ্য করে পরিকল্পিত জঙ্গি হামলার ছক ছিল এটি।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.