দিঘার জগন্নাথ মন্দির ঘিরে ক্রমবর্ধমান ভক্তসমাগমের কথা মাথায় রেখে পরিষেবা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমনে দীঘার পর্যটন আকর্ষণ কয়েক গুণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা এবং পরিষেবার মান খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বৈঠক করলেন মন্ত্রী তথা হিডকোর চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
শুক্রবার দুপুরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে মন্দির ট্রাস্টের সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় ভক্তদের ভোগ গ্রহণের বর্তমান ব্যবস্থার উপর। বর্তমানে জগন্নাথ মন্দির চত্বরে প্রায় এক হাজার জন একসঙ্গে বসে ভোগ গ্রহণ করতে পারেন। আগামী দিনে এই সংখ্যা কমপক্ষে দু’হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, এই লক্ষ্যে শীঘ্রই প্রস্তুতি শুরু হতে চলেছে।
এ মুহূর্তে শামিয়ানা খাটিয়ে ভক্তদের বসার ব্যবস্থা করা হলেও, বৈঠকে স্থায়ী ভোজনালয় নির্মাণের প্রস্তাব উঠে আসে। মন্দির ট্রাস্ট ও প্রশাসনের তরফে ভোগ গ্রহণের জন্য স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয় মন্ত্রীকে। পাশাপাশি ভোগের গুণগত মান বজায় রাখার বিষয়েও কড়া নজরদারির নির্দেশ দেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
মন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানান, মন্দিরে আগত কোনও দর্শনার্থী যেন কোনওভাবেই অসুবিধার সম্মুখীন না হন, তা নিশ্চিত করা মন্দির ট্রাস্টের দায়িত্ব। প্রবীণ নাগরিক ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য মন্দিরের প্রতিটি গেটে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভিড়ের সময়ে যাতে হুইল চেয়ারের ঘাটতি না হয়, সেই বিষয়েও বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ছুটির দিনগুলিতে জগন্নাথ মন্দির চত্বরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। সামনে বড়দিন ও নববর্ষ থাকায় ভিড় আরও বাড়বে বলেই অনুমান। সেই কারণে আগেভাগেই মন্দির চত্বর আলোকমালায় সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের প্রতিটি কোণে নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক নজর রাখার কথাও বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর উদ্যোগে তৈরি হওয়া দীঘার জগন্নাথ মন্দির আজ মানুষের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। আগামী দিনে কীভাবে আরও বেশি ভক্তকে উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, তা নিয়েই এই আলোচনা। ভোগ গ্রহণের পরিকাঠামো আরও বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হিডকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজশ্রী মিত্র, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ইউনিস রিসিন ইসমাইল, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) বৈভব চৌধুরী-সহ দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা।