খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার থেকে শুনানির নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু করে দিল নির্বাচন কমিশন। তবে এই শুনানি কীভাবে ও কোন পদ্ধতিতে হবে, সে বিষয়ে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে এখনও স্পষ্ট কোনও পথনির্দেশ না আসায় রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেই কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রবীণ নাগরিকদের হয়রানি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) দপ্তর। সূত্রের খবর, ৮৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে কোনও ভোটার যদি শুনানির আওতায় পড়েন, তাহলে তাঁকে আর শুনানির জন্য বাইরে যেতে হবে না। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সবুজ সংকেত মিললে সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাড়িতেই শুনানি করা হবে। শুধু বয়সজনিত কারণেই নয়, অসুস্থ ভোটারদের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা প্রযোজ্য হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্তমানে প্রথম পর্যায়ে যাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মা বা ঠাকুরদা-ঠাকুরমার নামের কোনও যোগসূত্র পাওয়া যায়নি— অর্থাৎ যাঁরা ‘আনম্যাপড’ শ্রেণিভুক্ত, তাঁদের কাছেই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। এই ধরনের ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩১ লক্ষ বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। যদিও কমিশন কর্তাদের একাংশের মতে, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝির আগে শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এর আগেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল জানিয়েছিলেন, যেসব ভোটারের জমা দেওয়া তথ্য বা নথি নিয়ে কমিশনের সন্দেহ রয়েছে, কেবল তাঁদেরই শুনানির জন্য ডাকা হবে। সংশ্লিষ্ট ভোটারকে কবে ও কোথায় হাজিরা দিতে হবে, তা জানিয়ে বাড়িতে নোটিস পৌঁছে দেবেন এলাকার বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও)।
সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই যাঁদের ম্যাপিং হয়নি— অর্থাৎ ২০০২ সালের তালিকায় যাঁদের বাবা-মা বা ঠাকুরদা-ঠাকুরমার কোনও হদিশ মেলেনি, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নোটিস দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন বিএলওরা। প্রবীণ নাগরিকদের যাতে কোনওভাবে হয়রানির মুখে পড়তে না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ইতিমধ্যে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, বাড়িতে শুনানি হলে সেখানে সংশ্লিষ্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও), অ্যাসিস্ট্যান্ট ইআরও (এইআরও) এবং বুথ লেভেল অফিসার উপস্থিত থাকবেন। তবে গোটা ব্যবস্থাটিই এখনও দিল্লির চূড়ান্ত অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে।
ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কমিশনের এই উদ্যোগ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই শুনানি পদ্ধতি নিয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ না আসায় রাজ্যজুড়ে নজর রয়েছে দিল্লির সিদ্ধান্তের দিকেই।