কলকাতা: এ বছরের রাজ্য বাজেট বক্তৃতায় লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের মাথাপিছু অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির কোনও উল্লেখ নেই। বাজেট বইয়ে প্রকল্পটির উল্লেখ থাকলেও, বরাদ্দ বৃদ্ধির বা উপভোক্তাদের জন্য প্রাপ্য অর্থ বাড়ানোর কোনও ঘোষণা করা হয়নি। বর্তমানে এই প্রকল্পে সাধারণ শ্রেণির মহিলারা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলারা ১২০০ টাকা করে পান।
তবে প্রশাসনিক মহলের ধারণা, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পের পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কেউ কেউ মনে করছেন, ভোটের ছ’মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঘোষণা করতে পারেন, আবার অনেকে মনে করছেন, তার আগেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
বাজেট বক্তৃতায় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ৪ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা করা হলেও, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় তা এখনও অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা যেখানে ৫৩ শতাংশ হারে ডিএ পান, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা পাবেন ১৮ শতাংশ, ফলে দুই পক্ষের মধ্যে এখনও ৩৫ শতাংশ পার্থক্য রয়ে গিয়েছে।
বাজেট বইয়ে নারী ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী উল্লেখযোগ্য। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ২.২১ কোটি মহিলা উপকৃত হয়েছেন।
বাজেট পেশের পর সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এবারের বাজেটে নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৮,৭৬২.০৩ কোটি টাকা।
২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সে কারণে এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আগামী বছর ভোট থাকায় ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ বাজেট পেশ করা হবে। তাই এবারের বাজেটে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিশেষ নজর রয়েছে।
বাজেট বইয়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফলে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট এবং বাল্যবিবাহের হার কমেছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। সবুজসাথী প্রকল্পেও ৪৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১ কোটি ২৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রী উপকৃত হয়েছে বলে রাজ্য বাজেট বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।