একদিকে উল্লাস, অন্যদিকে কান্না। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএল ট্রফি জয় উদ্যাপনের মাঝে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন ১১ জন, আহত অন্তত ৩৩ জন। তার পরেও থামেনি উৎসব। স্টেডিয়ামের ভিতরে যখন বিরাট কোহলিরা ট্রফি নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন, বাইরে তখন স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়েন বহু মানুষ।
বুধবার বিকেলে রাজ্য সরকার ও কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ) উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে (আরসিবি) সংবর্ধনার। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লাখো মানুষ ভিড় জমান স্টেডিয়ামের বাইরে। কেএসসিএ বিশেষ পাসের মাধ্যমে প্রবেশের ব্যবস্থা করলেও, জনস্রোতের চাপে তা কার্যত ব্যর্থ হয়ে পড়ে।
চোখের সামনে কোহলিদের এক ঝলক দেখার আশায় মানুষ গেটের সামনে ঠেলাঠেলি শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, আর তাতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। মুহূর্তের মধ্যেই পদপিষ্ট হয়ে মারা যান অন্তত ১১ জন। বহু মানুষ রাস্তায় পড়ে যান। অনেককে সিপিআর (CPR) দেওয়া হয় ঘটনাস্থলেই।
বিপদের মধ্যেও অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি। স্টেডিয়ামের ভিতরে চলতে থাকে নির্ধারিত অনুষ্ঠান, শিল্পীরা পারফর্ম করেন বেহালার সুরে। এই দৃশ্য বহু দর্শকের মনে দগদগে হয়ে থাকবে অনেক দিন।
এ দিকে আরসিবি দলের বাস বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্টেডিয়ামে পৌঁছয় জনসমুদ্র ভেদ করে। সেই সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার বিদান সৌধে কোহলিদের সংবর্ধনা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হলেও, স্টেডিয়ামে পৌঁছে তিনিও সংবর্ধনার মঞ্চে উঠে পড়েন। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়, প্রায় ৫০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এত বড় ভিড় সামলাতে সেই ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল।
বাইরে যখন অ্যাম্বুল্যান্সে করে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে, তখন ভিতরে চলতে থাকে আলো ঝলমলে অনুষ্ঠান। এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের ভূমিকা এবং পরিকল্পনার অভাব নিয়ে।