জনতার মন থেকে জনতার আদালত, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন তো রয়েই গেল!

ইমনকল্যাণ সেন: বিচারপতির আসন ছেড়ে সরাসরি রাজনীতির ময়দানে। অবসর নেওয়ার কথা ছিল আগস্টে। কিন্তু হাতে সময় বড্ড কম। সামনে লোকসভা ভোট। তাই তড়িঘড়ি ইস্তফা দিয়েই বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফেললেন হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল তো বটেই, উৎসুক সাধারণ মানুষের একাংশেরও প্রশ্ন, তা হলে এতদিন তিনি যে রায়গুলি দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা থেকে প্রভাবিত নয় কি?

শেষ কয়েক মাস ধরেই বিচারপতি হিসেবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া নির্দেশগুলোর অদ্ভূত একটা মিল দেখা যাচ্ছিল। সেগুলোর বেশির ভাগই হয় ডিভিশন বেঞ্চে অথবা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে খারিজ হয়ে যাচ্ছিল। এই তো কয়েক সপ্তাহ মাত্র আগে প্রাথমিক প্যানেল প্রকাশ নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ প্যানেল প্রকাশ এবং তা আদালতে জমা করার নির্দেশের দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আবার, ২০২২ সালের মে মাসে বিচারবিভাগীয় অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া রায় খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এক প্রধান শিক্ষকের পদ অবনমন ঘটানোর রায় খারিজ করে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু-সহ সংশ্লিষ্ট কাছে ইস্তফাপত্র পাঠান অভিজিৎ। তার পরই নিজের বাড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে ডাকেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিজিৎ জানিয়ে দেন, “আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি।” এতে নতুন কিছু নেই। বোঝাই যাচ্ছিল, এটাই হতে চলেছে। কিন্তু যে বিষয়টি তিনি আজ প্রকাশ্যে আনলেন, তার একটা সংক্ষিপ্ত হলেও প্রস্তুতি পর্ব বলে নিশ্চয় কিছু ছিল। ওই সময়কালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান কেমন ছিল? ওই সময়কালে তিনি আদালতের আসনে বসেছিলেন!

তিনিই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অভিজিৎ জানান, “উভয় পক্ষই যোগাযোগ করেছে। আমিও বিজেপির কাছে এসেছি, বিজেপিও আমার কাছে এসেছে”।

একইসঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, গত সাত দিন ধরে তিনি কোনো রায় দেননি এবং বিজেপি এবং তিনি গত সাত দিনে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সোজা কথায় তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মাত্র সাত দিনের মধ্যেই তিনি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা, পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত, প্রয়োগ, যোগাযোগ-সহ যাবতীয় সময়সাপেক্ষ কাজগুলি সেরে ফেলেছেন। একথা সত্যি হলেও যেমন কিছু যায় আসে না, তেমনই রঞ্জিত হলেও আকাশ ভেঙে পড়বে না। কারণ, এত দিন আদালতের আসনে বসে ঠাঁই পেয়েছেন জনতার মনে। এ বার তাঁর গন্তব্য জনতার আদালত!

Related posts

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক