প্রতি বছর নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে দেশের অসংখ্য বয়স্ক নাগরিকের মৃত্যু হয়। সাধারণ ফ্লু-তে ভুগতে ভুগতেই গুরুতর অবস্থায় পৌঁছে যান অনেকে। সেই মৃত্যুর হার কমাতে বড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ষাটোর্ধ্ব প্রবীণদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে নিউমোনিয়া ও ফ্লু ভ্যাকসিন। প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে পাইলট প্রকল্প। কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে চলবে এই টিকাদান প্রক্রিয়া।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর ব্লকে এই পাইলট প্রজেক্ট চালানো হবে। ভ্যাকসিন নিতে আসা প্রত্যেক প্রবীণ নাগরিককে বিমার আওতায় রাখা হবে। টিকা নেওয়ার পর শরীরে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খরচও দেবে সরকার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজের পকেট থেকে কোনও খরচ করতে হবে না।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সোনারপুর ব্লকে প্রায় ১,৫০০ প্রবীণ নাগরিককে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। টিকাকরণের জন্য আলাদা ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই তাঁদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন। ব্লকের ছ’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মসূচি চলবে।
টিকাকরণ শুরুর আগে ব্লক জুড়ে ব্যাপক প্রচার চালাবে স্বাস্থ্য দফতর। ভ্যাকসিন নিয়ে যাতে কারও মনে সংশয় না থাকে, তাই পাড়া-পাড়ায় সচেতনতা অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একজন প্রবীণ নাগরিককে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হবে দুটি ডোজ, যা কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রয়োগ করা হবে।
টিকাকরণের পর দুই বছর ধরে প্রবীণদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের স্বাস্থ্যগত পরিবর্তন এবং ভ্যাকসিনের প্রভাব নিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া রিপোর্ট বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, “নিউমোনিয়া ও ফ্লুর টিকা দেওয়ার কর্মসূচি খুব শীঘ্রই শুরু হবে। রাজ্যের মধ্যে শুধু সোনারপুরেই পাইলট প্রজেক্ট হচ্ছে। এখানে সাফল্য মিললে অন্য জেলাতেও কর্মসূচি চালু হতে পারে।”
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, প্রতি বছর দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জায় বহু প্রবীণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। সাধারণ সর্দি-কাশি থেকেও রূপ নেয় নিউমোনিয়া বা আরও মারাত্মক জটিলতায়। এই পরিস্থিতি ঠেকাতেই নেওয়া হচ্ছে সরকারি টিকাকরণ পরিকল্পনা। সম্প্রতি সব রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্র, যেখানে ষাটোর্ধ্ব নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।