রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত আরও তীব্র রূপ নিল। মঙ্গলবার শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজভবনের তরফে অভিযোগ দায়েরের পর এ বার পালটা একই থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর অভিযোগ—রাজ্যপাল বারবার উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন এবং বাংলার নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে এমন সব বক্তব্য দিচ্ছেন, যা সাংবিধানিক সীমার বাইরে। অভিযোগপত্রে তিনি রাজ্যপালের একাধিক মন্তব্যের উল্লেখ করে দাবি করেছেন, এ সব বক্তব্যের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যের নির্বাচনী ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজভবনের বিভিন্ন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল যে মন্তব্য করছেন, তা শুধু রাজ্য প্রশাসন নয়, নির্বাচন কমিশনের কাজেও অযথা প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি রাজভবনের উপসচিব সুমন পালের ভূমিকা নিয়েও তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত রাজ্যপালের এসআইআর সম্পর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে। সিভি আনন্দ বোস জানিয়েছিলেন, “এসআইআর নতুন পদ্ধতি। সুষ্ঠু ভোটের জন্য এটি প্রয়োজন। বিহারের মতো বাংলাতেও মানুষ এই পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।” এই মন্তব্যের পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি অভিযোগ করেন, “রাজভবনে বিজেপির অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের আক্রমণ করানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর আরও কঠোর বক্তব্য—“তিনি অপদার্থ রাজ্যপাল! বিজেপির চাকরবাকর রাজ্যপাল থাকলে বাংলায় কোনও ভাল জিনিস হবে না।”
এই মন্তব্যের পরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয় রাজভবন। এমনকী রাজভবনে কোথাও অস্ত্র-বিস্ফোরক মজুত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেও নির্দেশ দেন রাজ্যপাল।
এ দিন দু’পক্ষের পালটা-পালটি অভিযোগে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল।