ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। অন্ধ্র উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ‘গুলাব’। আজ, রবিবার বিকালেই কলিঙ্গপত্তনামে ল্যান্ডফল। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টা ৯০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের পরই থাকছে নিম্নচাপের ফাঁড়া। বড় বিপদের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই ওড়িশা উপকূল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
গুলাবের ল্যান্ডফলের সময়ে অর্থাৎ আজ সন্ধ্যায় উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া এবং সমুদ্র উত্তাল থাকবে। হাওয়া অফিস বলছে, রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির সর্তকতা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলাতেও।
নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভবনায় শনিবার থেকেই অন্ধ্র প্রদেশের উত্তর অংশে এবং পার্শ্ববর্তী ওড়িশার দক্ষিণ উপকূলে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা যাবে রাজ্যেও। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সেখানে হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। সোমবার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবারও জারি করা হয়েছে কমলা সর্তকতা। কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সবথেকে বেশি ক্ষতি হবে শ্রীকাকুলাম সম্পেটা বিজয় নগরম এবং গঞ্জাম জেলার বিভিন্ন অংশে। আজ সকাল থেকেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি দক্ষিণ ওড়িশা ও উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে জেলাগুলিতে। আগামীকাল ও ভারী বৃষ্টি চলবে ওড়িশা অন্ধ্রপ্রদেশ তেলেঙ্গানা ছত্রিশগড় বিদর্ভে। আগামী কয়েকদিন গুজরাট কঙ্কন গোয়া সৌরাষ্ট্র কচ্ছ মহারাষ্ট্র ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।
নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে সবকটি জেলা প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড় “গুলাব” ও জোড়া নিম্নচাপের জেরে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে কলকাতা সহ দক্ষিনবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। কাঁচা বাড়িতে যারা থাকেন তাদের ২৬ সেপ্টেম্বর সকালের মধ্যে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বস্তি দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে দৈনিক সংক্রমণ কমেছে প্রায় ৪.৩ শতাংশ
দিঘা পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ। সোমবার থেকে দিঘাকে পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ জেলাশাসকের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ। পর্যটকশূন্য করতে দিঘার সমস্ত হোটেলকে প্রশাসনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় দিঘা উপকূলেও জারি হয়েছে সতর্কতা। বিভিন্ন থানার তরফে উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। মত্স্যমন্ত্রী অখিল গিরি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সমস্ত ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সব বিদ্যুতের পোস্ট যাতে ঢাকা থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। কোনও বৈদ্যুতিক তার যাতে খোলা না থাকে, নজর রাখতে হবে সেদিকেও। বালিগঞ্জ ও মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনে নজর দেওয়া হয়েছে। ২ পাম্পিং স্টেশনে বাড়তি লোকের ব্যবস্থা রাখছে পুরসভা।
অন্যদিকে, ওড়িশা সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই সাতটি জেলায় উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। মূলত গঞ্জম ও গজপতিতেই ঘূর্ণিঝড়ে সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সগঞ্জম, গজপতি, রায়গড় ও কোরাপুটের জেলাশাসকদের জেলার বাসিন্দাদের জন্য যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলগুলিতে ভূমিধস নামতে পারে বলে কাঁচা বাড়ির বাসিন্দাদের অনত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ওড়িশা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (ODRAF) ৪২টি দল এবং জাতীয় বিপর্য়য় মোকাবিলা দফতরের ২৪টি দল প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও দমকল বিভাগের ১০২টি দলকেও গজপতি, গঞ্জম, রায়গড়, কোরাপুট, মালকানগিরি, নবরংপুর ও কান্দামাল জেলায় ইতিমধ্য়েই পাঠানো হয়েছে।