মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ । এনডিটিভির একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাজীব কুমারের জায়গায় বসতে চলেছেন জ্ঞানেশ কুমার। বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের পর এই পদে দায়িত্ব নেবেন তিনি।
এই দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, তামিলনাড়ু, বিহার এবং অসমের বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। এর মধ্যে বিহারের নির্বাচন এ বছরই হওয়ার কথা, বাকি চার রাজ্যের নির্বাচন ২০২৬ সালে হবে।
জ্ঞানেশ কুমার ২০২৯ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই পদে থাকবেন। তাঁর মেয়াদে ২০টি বিধানসভা নির্বাচন, ২০২৭ সালের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পরিচালনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। বৈঠকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই নিয়োগ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন এবং তাঁর আপত্তির কথা জানান।
১৯৮৮ ব্যাচের কেরালা ক্যাডারের আইএএস অফিসার জ্ঞানেশ কুমার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের প্রস্তাব তৈরির সময় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে।
এদিকে, এই নিয়োগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে এবং আগামী শনিবার বিষয়টি নিয়ে শুনানি হবে। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, সরকার নির্বাচন কমিশনের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চাইছে এবং কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়ে উদাসীন।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, কমিশনের পদ খালি থাকুক, তা চায়নি কেন্দ্র। আদালতও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেনি। তাই আইনি পরামর্শ নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালে সংসদে গৃহীত নতুন আইনের মাধ্যমে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ করতেন। নতুন আইনে আইনমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন কমিটি পাঁচজনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করে এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি চূড়ান্ত নির্বাচন করে।
তবে সুপ্রিম কোর্ট ২০২৩ সালের আগে নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ কমিটিতে প্রধান বিচারপতিকে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সংসদীয় আইন সেই বিধান বাতিল করে এবং প্রধান বিচারপতির পরিবর্তে একজন মন্ত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে। এই পরিবর্তনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে, যেখানে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে এই সিদ্ধান্ত কমিটির ভারসাম্য নষ্ট করবে এবং এর নিরপেক্ষতা প্রভাবিত করবে।