ডেস্ক: দেবশ্রী রায়কে ফের রায়দিঘি কেন্দ্রের প্রার্থী করা হল না, তা নিয়ে শনিবার জনসভায় মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুদিন ধরেই দেবশ্রীর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কে বদল এসেছে। রায়দিঘির বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল, তাই প্রার্থী করিনি। যিনি এখানকার বিজেপি প্রার্থী, তিনি তৃণমূলের টিকিট চেয়েছেন। টিকিট না পেয়ে, উনি বিজেপি চলে গিয়েছেন।‘বিজেপির সবটাই তৃণমূলের থেকে ধার করা’।
দিল্লিতে ছয় বছরে বিজেপির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখানে কী করে ডবল ইঞ্জিন চালাবে? বাংলা ইঞ্জিন চালাবে। সভায় বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ কথা নিয়ে কটাক্ষ করলেন মমতা। এদিন বলেন, বিজেপি পুলিসের ড্রেস পরিয়ে ফেক পুলিস নিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের লোককে ভয় দেখাচ্ছে। ওদের কথা শুনবেন না। ভোটের পর ওরা পালাবে। আমরা বাংলার লোক, আমরাই থাকব।
‘আমফানের সময় বিজেপির সবাই পালিয়ে গিয়েছিল। শুধু আমি এলাকায় থেকে পাহারা দিয়েছি। দু-একটা সমস্যা হয়েছে। কিন্তু আমরা রাস্তাঘাট তৈরি করে দিয়েছি, পুকুর-ডোবা পরিষ্কার করেছি। আমপানে কেউ ছিল না। আমি রাত জেগে পাহারা দিয়েছি। যাঁরা সাহায্য পাননি আমি দেব কথা দিচ্ছি। যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী পাননি, তাঁদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব। আগে সুন্দরবনের দিকে কেউ ফিরেও তাকাতো না। এখন অনেক উন্নতি হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ১০ বছরে যা করেছে কোনও সরকার কোনওদিন তা করতে পারেনি, করবে না।
সংখ্যালঘু এলাকায় কেউ অত্যাচার করতে এলে সবাই মিলে আজানের ধ্বনি দেবেন। দেখবেন সব চুপ করে গেছে। কোনও হিন্দু-মুসলমান অশান্তি করবে না, আমরা একসঙ্গে থাকি। এক সঙ্গে দুর্গাপুজো করি, একসঙ্গে কালিপুজো করি। একসঙ্গে ইফতার করি। সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের বলব হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে। আর ফুরফুরা শরিফের এক চ্যাঙড়াকে নিয়ে সে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে কমিউনাল স্লোগান দিচ্ছে। আর হিন্দু মসলমানে ভাগাভাগির চেষ্টা করছে। আর মুসলমানের ভোটটাকেও ভাগাভাগির চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: SSKMএ চলল গুলি, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার এক এসআই
বাংলার মানুষ মাথা নত করে না।নির্বাচনের আগে পায়ে চোট করে দিয়েছে। যাতে আমি প্রচারে যেতে না পারি। আরে, আমি তো মায়ের দুটো পা নিয়ে যাব।
রায়দিঘির সভায় শুরুতেই নন্দীগ্রামের ভোটের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, নন্দীগ্রামে যা হয়েছিল…ওরা খুব অত্যাচার করেছিল..কিন্তু মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে..আমাদের পক্ষে ভোট খুব ভালো হয়েছে। বিজেপিকে আক্রমণ শুনিয়ে বলেন, ‘বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এসেছে বিজেপি। নন্দীগ্রামেও গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভোটারদের বহিরাগতরা হুমকি দিয়েছিল। পুলিশের উর্দি পরিয়ে ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে।’
এদিন সভায় বহিরাগত ইস্যুতে ফের সুর চড়ান মমতা। বিজেপি টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করবে। সমস্ত হোটেল, গেস্ট হাউস-সব বুক করে নিয়েছে। বহিরাগত আনছে। তাঁর অভিযোগ, নন্দীগ্রামে বহিরাগতরা বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ও সন্তানকে কিডন্যাপ করার হুমকি দিয়েছিল বহিরাগতরা।
অসমে এনপিআর, সিএএ-র নামে ১৮ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ দিয়েছে। বিজেপি দুদিন বাদে ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেবে, টাকা পাবেন না। রেল বিক্রি করে দিয়েছে, সব কিছু বিক্রি করে দিচ্ছে। আর ভোটের সময় পাঁচশো টাকা দিচ্ছে।