দেশের বৃহত্তম বিমানসংস্থা ইন্ডিগোতে কার্যত চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। পরিষেবা ভেঙে পড়েছে সম্পূর্ণভাবে। শুক্রবারও দেশের প্রায় সব প্রান্তে অন্তর্দেশীয় উড়ান বাতিল করেছে সংস্থাটি। ফলে বিমানবন্দরগুলিতে তীব্র হুলস্থুল, ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে।
ডিজিসিএ-র নতুন নিয়ম প্রত্যাহার
এই পরিস্থিতির মধ্যে চাপের মুখে পড়ে উড়ান-পরিষেবার দায়িত্বে থাকা অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা (ডিজিসিএ) আংশিক প্রত্যাহার করল নতুন বিশ্রাম-নিয়ম।
আগের নির্দেশিকা অনুযায়ী
- বিমানকর্মীদের সাপ্তাহিক বিশ্রাম ও ছুটি—দুটি আলাদা হবে,
- ছুটিকে বিশ্রামের বিকল্প হিসেবে ধরতে পারবে না কোনও বিমান সংস্থা।
শুক্রবার সেই নির্দেশিকাই প্রত্যাহার করে জানানো হয়েছে—এখন থেকে বিমানকর্মীদের ছুটির দিনকেই বিশ্রামের দিন হিসেবে গণ্য করা যাবে। ডিজিসিএ জানিয়েছে, বর্তমান সঙ্কটজনক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন বিমানসংস্থার আবেদন বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উড়ান বাতিলের অভূতপূর্ব ধাক্কা
গত তিন দিনে ইন্ডিগো বাতিল করেছে প্রায় ৩,৪০০ উড়ান।
শুক্রবার একদিনেই বাতিল হয়েছে ৬০০-রও বেশি ফ্লাইট।
এর জেরে আটকে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী।
শুধু কলকাতা বিমানবন্দরেই
- নির্ধারিত ৪৬৮ ফ্লাইটের মধ্যে
- বাতিল হয়েছে ৯২টি,
- দেরিতে ওঠানামা করেছে ৩২০টি বিমান।
অনেকে অফিস, চিকিৎসা বা জরুরি প্রয়োজনে যাত্রা করার কথা থাকলেও হঠাৎ বাতিল হওয়া উড়ানে তাঁদের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভেস্তে গেছে। যাত্রীরা অভিযোগ করছেন—সময়সূচি, তথ্য বা বিকল্প উড়ান সংক্রান্ত সঠিক সাহায্যও পাচ্ছেন না।
ইন্ডিগো জানিয়েছে, আপাতত আটকে থাকা যাত্রীদের সাহায্য করার চেষ্টা চলছে। তবে পরিষেবা কবে স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে সংস্থাটি নির্দিষ্ট কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি।
আরও উড়ান বাতিলের আশঙ্কা
অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে—আগামী দিনেও উড়ান বাতিলের সংখ্যা বাড়তে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তৎপর হয়েছে কেন্দ্র।
অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু ডিজিসিএ, বিভিন্ন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিমানসংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। তবে বৈঠক সত্ত্বেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও নিশ্চিত রূপরেখা তৈরি হয়নি।