ইন্ডিগোর পরিষেবায় নজিরবিহীন বিপর্যয়ের জেরে গত প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে দেশজুড়ে যাত্রীরা কার্যত আতান্তরে। নির্ধারিত বিমানে উঠতে না পেরে বহু যাত্রীকে বিকল্প রুটে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে, তাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরির পর। দিনভর অসংখ্য উড়ান বাতিল হওয়ায় বিমানবন্দরে তৈরি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনাহীনতাকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দমদম বিমানবন্দর থেকে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে মমতা বলেন,
“বেশ কয়েকদিন ধরে বিমান পরিষেবা না পাওয়ায় সাধারণ মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে। আমার মনে হয় কোনও পরিকল্পনা না করায় এই বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। এর জন্য কেন্দ্র দায়ী। তাদের আগেই বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হতো। আমার তো মনে হয়, যাত্রীরা চাইলে আদালতে যেতে পারেন।”
মমতার মতে, হঠাৎ বিমান বাতিল হলে যাত্রীদের বিকল্প রুটে পাঠানো বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন,
“বিমানে যেতে দু’ঘণ্টা লাগে, ট্রেনে একই পথ যেতে ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা। রিজার্ভেশন, আগাম টিকিট—সব মিলিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি অসহনীয়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সবসময় ভোটের কথা ভাবে, আর আমরা ভাবি মানুষের কথা। তাই সাধারণ মানুষের এই দুরবস্থা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
ইন্ডিগোর পরিষেবায় এই বিপর্যয় চলছে টানা প্রায় সাত দিন। সোমবারও দিল্লি থেকে ১৩৪টি, বেঙ্গালুরু থেকে ১২৭টি, চেন্নাই থেকে ৭১টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। কলকাতা, মুম্বই, আহমেদাবাদ, ভাইজ্যাগ—দেশের বহু বিমানবন্দরেই ইন্ডিগোর একাধিক ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত।
এই পরিস্থিতিতে পাইলটদের পক্ষেও দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য,“পরিষেবা ঠিক রাখতে ওভারটাইম করানো হচ্ছে বহু পাইলটকে। কিন্তু এটা কোনও সমাধান নয়। পাইলটদেরও বিশ্রাম দরকার। তাই আগেই বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি রাখা উচিত ছিল।”
পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। যাত্রীদের ক্ষোভ, বিমানবন্দরগুলিতে বিশৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া—সব মিলিয়ে ইন্ডিগোর বিমান সংকট এখন জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।