রবিবার ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিককেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করে আমেরিকা। একই সঙ্গে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান ও ইজরায়েল একে অপরের উপর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে শুরু করে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফোরডো, ইসফাহান এবং নাতান্জ়— ইরানের এই তিন পরমাণুঘাঁটি লক্ষ্য করে রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময়) হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এই কেন্দ্রগুলি পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর এই প্রথমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অভ্যন্তরে এমন বড় হামলা চালাল। ট্রাম্প বলেন, “ইরানের মূল পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। এই হামলা ছিল অত্যন্ত সফল।”
ট্রাম্প আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইরান যদি শান্তির পথ বেছে না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতের হামলা আরও বড় ও আরও সহজ হবে।” তিনি বলেন, “তাদের সামনে হয় শান্তি, নয়তো ভয়ঙ্কর পরিণতি।”
এই হামলায় বি-২ বোমার ব্যবহার করেছে আমেরিকা। এই বি-২ বোমার বহন করতে পারে ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর, যা মাটির গভীরে থাকা লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার জন্য তৈরি।
এর জবাবে ইরান রবিবার সকালে নতুন করে ইজরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় অন্তত ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র হাইফা, তেল আভিভ-সহ ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরে আঘাত হানে। ইজরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তেল আভিভের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরেও হামলা হয়েছে। এই হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।
ইরান জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো উন্নত কায়বার-শাকেন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা প্রতিপক্ষের রাডার বিভ্রান্ত করতে পারে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিতে পশ্চিম ইরানে একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
এই উত্তেজনার মধ্যে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরানের উপর আমেরিকার হামলার প্রতিশোধ তারাও নেবে। তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সাময়িক যুদ্ধবিরতি ছিল, যা এখন শেষ বলে ধরা হচ্ছে।
এইভাবে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত দ্রুত এক বহুপাক্ষিক যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে, যার প্রভাব সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের উপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।